৫৫ বছর পর কানে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’

News Desk

৫৫ বছর পর কানে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’. Dhakainlight.com

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী চলচ্চিত্র ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭০ সালে। সেই সিনেমা এবার নতুন রূপে জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসব কান-এ। মুক্তির ৫৫ বছর পর ছবিটির ফোর-কে (4K) সংস্করণ প্রদর্শিত হয়েছে কান চলচ্চিত্র উৎসবের ক্ল্যাসিকস বিভাগে।

চলচ্চিত্রটির এই বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় ১৯ মে, ফরাসি রিভেইরার বুনুয়েল থিয়েটারে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’র দুই অভিনয়শিল্পী শর্মিলা ঠাকুর ও সিমি গাড়োয়াল। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন শর্মিলার মেয়ে সাবা পাতৌদি। উৎসবের লালগালিচায় তাদের সঙ্গে দেখা যায় বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা ওয়েস অ্যান্ডারসনকেও।

উৎসবের দিন শর্মিলা ঠাকুর পরেছিলেন গাঢ় সবুজ শাড়ি, আর সাবা পাতৌদি পরেন ঝলমলে হলুদ ঐতিহ্যবাহী পোশাক। সিমি গাড়োয়াল হাজির হন সাদা গাউনে। প্রদর্শনীর পর ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবিটি দুই মিনিট ধরে দর্শকদের স্ট্যান্ডিং ওভেশন বা দাঁড়িয়ে প্রশংসা পায়, যা সত্যজিৎ রায়ের প্রতি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রপ্রেমীদের গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিফলন।

চলচ্চিত্রটির ফোর-কে সংস্করণটি পুনরুদ্ধার ও প্রস্তুত করেছে দ্য ফিল্ম ফাউন্ডেশনের ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্ট। এই সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে ধ্বংসপ্রায় গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রগুলোকে সংরক্ষণ ও পুনর্জীবিত করার কাজ করে থাকে।

এই উপলক্ষে মার্কিন চলচ্চিত্র সাময়িকী ভ্যারাইটি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়েস অ্যান্ডারসন বলেন, “সত্যজিৎ রায়ের যেকোনো কাজ সংরক্ষণের যোগ্য। তবে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ যেন বিশেষভাবে অমূল্য এক রত্ন, যেটিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পেরে আমরা গর্বিত।”

‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ১৯৭০ সালে বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণভালুক জয়ের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। তরুণদের মানসিক দ্বন্দ্ব, শহর ও প্রাকৃতিক পরিবেশের দ্বন্দ্ব এবং আত্মঅনুসন্ধানের গল্প নিয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি সত্যজিৎ রায়ের অন্যতম পরীক্ষামূলক কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়।

৫৫ বছর পর কানের মতো বিশ্বমঞ্চে এর প্রদর্শনী শুধুমাত্র ভারতীয় চলচ্চিত্র নয়, বরং বাংলা সাহিত্যের আলোকে নির্মিত চলচ্চিত্রকেও এক নতুন সম্মান ও স্বীকৃতি এনে দিল। এটি প্রমাণ করে, সত্যিকারের শিল্প কখনো পুরোনো হয় না—বরং সময়ের সঙ্গে আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

4o

Leave a Comment

Footer Section