তীব্র সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত ২১০ টাকা ভাড়াতেই চালু হয়েছে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথের স্পিডবোট চলাচল। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে ফের স্পিডবোট চলাচল শুরু করেন মালিকেরা। এর আগে ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ৩০০ টাকা ভাড়া আদায়ের দাবিতে এই নৌপথে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাঁরা।
কাজীরহাট-আরিচা স্পিডবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বেড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রইজউদ্দিন জানিয়েছেন, যাত্রীদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আজ সকালে মালিকদের নিয়ে বৈঠকে বসা হয়। যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, সরকার নির্ধারিত ভাড়াতেই স্পিডবোট চালানো হবে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের সময়ে একমুখী যাত্রী থাকায় ফেরার পথে স্পিডবোট খালি চালাতে হয়, এতে প্রতিবার প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়। কিন্তু যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে লোকসান স্বীকার করেই স্পিডবোট চলাচল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র নগরবাড়ি-কাজীরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আবদুল ওয়াকিল। তিনি বলেন, স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হওয়ার পর বিআইডব্লিউটিএ ও স্থানীয় প্রশাসন মালিকদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করে। বৈঠকে তাঁদের জানানো হয়, সরকারি প্রজ্ঞাপনের বাইরে ভাড়া বাড়ানোর সুযোগ নেই এবং তাঁদের আবেদনের নিষ্পত্তিতে সময় লাগবে। যাত্রীদের দুর্ভোগ তুলে ধরার পর মালিকেরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় চলাচলের সিদ্ধান্ত নেন।
জানা গেছে, পাবনার বেড়া উপজেলার কাজীরহাট থেকে মানিকগঞ্জের আরিচা পর্যন্ত এই নৌপথের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন ধরে এ পথে ২৫০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছিল, যা দেশের অন্যান্য নৌপথের তুলনায় বেশি। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরকার ২১০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে এরপরও অধিকাংশ স্পিডবোট মালিক ২৫০ টাকা করেই ভাড়া আদায় করে আসছিলেন।
গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার পর মালিকেরা ভাড়া কমিয়ে ২১০ টাকা করেন। তবে তাতেও লোকসানের আশঙ্কা থেকে তাঁরা ১০ দিনের জন্য ৩০০ টাকা ভাড়া আদায়ের আবেদন করেছিলেন, যা অনুমোদন না পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে ঘরমুখী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
অবশেষে আজ সকালে সরকারি নির্ধারিত ভাড়ায় স্পিডবোট চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মাঝে। স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীরা মালিকপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।