‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাকে পাঁচ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো

News Desk

‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাকে পাঁচ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো. Dhakainlight.com

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী তামান্না শারমিনকে নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা এই আদেশ দেন।

তামান্না শারমিন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এর আগেই গত ১০ মে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় সংঘটিত জোড়া খুন, হত্যার হুমকি, অস্ত্র সরবরাহসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন জানিয়েছেন, গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে পাঁচজন নিহত হন—তাঁরা হলেন হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, মো. মাহিন, তানভীর সিদ্দিকী, শহীদুল ইসলাম ও ফজলে রাব্বি। এই পাঁচটি পৃথক মামলায় তামান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন জানায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। আদালত শুনানি শেষে তা অনুমোদন করেন।

পুলিশের আবেদনে বলা হয়, ওই সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সদস্যরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনে হামলা ও গুলি চালায়। সেই ঘটনায় সাজ্জাদ হোসেনের বাহিনী অংশ নেয়, যার সরাসরি সমন্বয় ও অস্ত্র সরবরাহে তামান্না শারমিনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাঁকে মূল অভিযুক্তদের একজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছুঁড়ে জামিনে সাজ্জাদকে ছাড়িয়ে আনার হুমকি দেন তামান্না। এরপর ৩০ মার্চ চট্টগ্রামের বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডে একটি প্রাইভেট কারে গুলি চালানো হয়, যাতে দুজন নিহত হন। নিহতদের একজনের মা বাদী হয়ে মামলা করেন, যাতে সাজ্জাদ, তাঁর স্ত্রী তামান্না এবং আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ এখন পর্যন্ত তামান্নাসহ সাতজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় ঝুট ব্যবসা, দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ অন্তত পাঁচটি কারণে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সাজ্জাদ ও তামান্নার জড়িত থাকার ব্যাপারে স্পষ্ট তথ্য মিলেছে। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তামান্না শারমিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ও সহিংস কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

এই ঘটনাগুলো চট্টগ্রামে রাজনৈতিক ও অপরাধ জগতের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই মামলাগুলোর তদন্তে আরও বেশ কিছু নাম প্রকাশ পেতে পারে। তদন্তের স্বার্থে অনেক বিষয় এখনও গণমাধ্যমে জানানো হয়নি।

Footer Section