শেরপুরের নদ–নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। ভারতের উজান অঞ্চল থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং স্থানীয়ভাবে বৃষ্টি না থাকায় জেলার চেল্লাখালী, ভোগাই, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। এতে করে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, ভোগাই নদীর পানি ১৯৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৫৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝিনাইগাতীর মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীতেও গতকাল রাত থেকে পানির স্তর ক্রমশ কমছে।
পাউবো এবং স্থানীয় প্রশাসনের ধারণা, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা অঞ্চলে বৃষ্টিপাত না থাকায় পাহাড়ি ঢলের প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে নদ–নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি আর হচ্ছে না এবং কিছু এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতাও ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারাও পানি কমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঝিনাইগাতী শহরের মহারশি নদীর পাড়ে বসবাসরত আজমত আলী জানান, গত কয়েকদিন নদীর পানি বাড়ছিল, তবে সোমবার রাত থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। নালিতাবাড়ী উপজেলার সন্ন্যাসীভিটা গ্রামের রমিছা বেগম বলেন, ‘সোমবার সকালে ঢল নেমেছিল, তবে রাত থেকে পানি কমছে। আশা করছি, এবার আর কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি হবে না।’
নালিতাবাড়ীর বাঘবেড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূরে আলম বলেন, ‘ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টি হলে আমাদের নদ–নদীতে সরাসরি প্রভাব পড়ে। তবে এবার মেঘালয়ে বৃষ্টি কম হওয়ায় পানি স্বাভাবিক হচ্ছে।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘বৃষ্টি ও ঢলের কারণে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বাড়ছিল, তবে বর্তমানে তা কমে এসেছে। উজানের পানি ভাটিতে নেমে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও তা এখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে।’
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখিনুজ্জামান জানান, এখন পর্যন্ত বাঁধে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং আপাতত বন্যার আশঙ্কাও নেই। তবে পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।
জেলার মানুষ কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। যদি আবার বৃষ্টি শুরু হয় বা উজানে ঢল নামে, তবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও কম।