জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাইল্যান্ডে মৃত্যুবরণকারী শহীদ মোহাম্মদ হাসানকে আজ সকালে তাঁর নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে। রোববার সকাল ৯টায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চর জব্বর ইউনিয়নের চেউয়াখালী বাজারসংলগ্ন তরিকউল্যাহ সমাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
হাসানের জানাজায় স্থানীয় জনসাধারণের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, জেলা প্রশাসন এবং সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ উপস্থিত থেকে শহীদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেন এবং সরকারিভাবে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
জানাজাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেলা প্রশাসক বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন চেতনার স্ফুরণ ঘটিয়েছে। শহীদ হাসানের আত্মত্যাগ আমাদের জাতির বিবেককে জাগ্রত করেছে এবং একটি ন্যায্য সমাজব্যবস্থার আশায় আগামীর পথ দেখাচ্ছে।
জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নোয়াখালী জেলা আমির ইসহাক খন্দকার, এনসিপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নোয়াখালী অঞ্চলের আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলামসহ অসংখ্য শ্রদ্ধাশীল মানুষ।
গত ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের টাইগারপাসে সংঘটিত জুলাই অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত হন হাসান। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতাল এবং পরে পায়াথাই পাহোলিওথিন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। টানা চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।
শহীদ হাসানকে শেষ বিদায় জানাতে হাজারো মানুষ একত্রিত হন তাঁর গ্রামের বাড়িতে। তাঁর মৃত্যুতে নোয়াখালীসহ সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক প্রতীক হিসেবে হাসানের স্মৃতি এখন লাখো মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রইল।