জুলাইযোদ্ধা তালিকা নিয়ে প্রতিবাদ, নরসিংদীতে কলেজছাত্রকে কুপিয়ে জখম

News Desk

জুলাইযোদ্ধা তালিকা নিয়ে প্রতিবাদ, নরসিংদীতে কলেজছাত্রকে কুপিয়ে জখম. Dhakainlight.com

প্রতিনিধি, নরসিংদী | ০৯ মে ২০২৫, ১৭:২৪

নরসিংদীতে রাজনৈতিক প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় এক কলেজছাত্রকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত মিনহাজুর রহমান (১৭) বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের বিলাসদী এলাকায় তাঁর ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত মিনহাজুর রহমান নরসিংদী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শহরের বাসাইল এলাকার বাসিন্দা। পরিবার ও সহপাঠীরা অভিযোগ করেছেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের নেত্রী ইভা আলমের মেয়ের নাম ‘জুলাইযোদ্ধা’ তালিকায় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এই কারণেই তাকে লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে।

ঘটনার পেছনে অভিযুক্ত শাহ আলম, যিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইভা আলমের স্বামী এবং সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহ আলম, তাঁর ভাই শাহেদ হোসেন এবং আরও অন্তত ২০ জন মিলে হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দেশি অস্ত্র ব্যবহার করে মিনহাজুরকে কুপিয়ে আহত করা হয়।

আন্দোলনকারী ছাত্রদের দাবি, ইভা আলম ও শাহ আলম দম্পতির মেয়ে জুলাই আন্দোলনে অংশ না নিয়েও ‘জুলাইযোদ্ধা’ তালিকায় স্থান পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে মিনহাজুরসহ অন্য শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের পর থেকেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হুমকির মুখে পড়েন।

হামলার সময় মিনহাজুরের সঙ্গে থাকা সাজিদ হোসেন জানান, তাঁরা আগেই আশঙ্কা করছিলেন এমন হামলার, কারণ অভিযুক্ত পরিবারটি নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিল। বৃহস্পতিবার রাতে ২০ জনের মতো লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে মিনহাজুরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে তাঁর ফুসফুসে গুরুতর আঘাত লাগে বলে জানিয়েছেন নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান।

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত শাহ আলম ও ইভা আলমের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে, ফলে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ঘটনায় স্থানীয় ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহার নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

Leave a Comment

Footer Section