গাজীপুরে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় ৬৪ শ্রমিকের নামে মামলা, অজ্ঞাতনামা আরও দেড় হাজার আসামি

News Desk

গাজীপুরে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় ৬৪ শ্রমিকের নামে মামলা, অজ্ঞাতনামা আরও দেড় হাজার আসামি. Dhakainlight.com

গাজীপুরের শ্রীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের এপিসি (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) গাড়ি ভাঙচুর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় ৬৪ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও প্রায় দেড় হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি করেছে গাজীপুর শিল্প পুলিশের শ্রীপুর সাব জোন।

মঙ্গলবার রাতেই উপপরিদর্শক (এসআই) সুশান্ত কুমার রায় বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন। এর আগে সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থল থেকে ২৩ জন শ্রমিককে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।

শ্রীপুর শিল্প পুলিশের ইনচার্জ আবদুল লতিফ বলেন, মামলায় কোনো নারী শ্রমিককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাঁদেরও মামলা অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।

শ্রমিক বিক্ষোভের সূচনা হয় সোমবার সন্ধ্যায় জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানার এক শ্রমিক জাকির হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছুটি না পেয়ে এবং কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে জাকির আটতলা ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত জাকির নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাসিন্দা।

এ ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকেরা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা জাকিরের মৃত্যুর জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে বিচারের দাবি জানাতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিক্ষোভ রূপ নেয় সহিংসতায়। শ্রমিকেরা কারখানা ঘেরাও করে ভাঙচুরের চেষ্টা করেন এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটাও করে। সংঘর্ষে পুলিশের এপিসি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সদস্য আহত হন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেন।

বেলা ১১টার দিকে সংঘর্ষের দ্বিতীয় দফায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ঘটনাটির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলমান। শ্রমিকদের দাবি ও অভিযোগ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

Footer Section