গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে বিয়ে এবং তার পরিবারের কাছ থেকে যৌতুক আদায়ের অভিযোগে ফয়সাল আহমেদ (৩৩) নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম থেকে যৌথ বাহিনী তাকে আটক করে এবং পরে কাশিয়ানী থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটক ফয়সাল আহমেদ নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার পাঁচদোনা মেহেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম নুরুল ইসলাম। পুলিশ ফয়সালের কাছ থেকে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার, ৩৮ হাজার নগদ টাকা, দুটি মোবাইল ফোন এবং ছয়টি সিম কার্ড জব্দ করেছে।
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ না পেলেও পুলিশের পক্ষ থেকে ফয়সালের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফয়সাল নিজেকে সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয়ে পরিচিত করিয়ে কাশিয়ানীর এক গ্রামের স্কুলছাত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে গত ২৫ মে ‘কোর্ট ম্যারেজ’ বা ‘অ্যাফিডেভিট বিয়ে’-এর নামে কৌশলে মেয়েটিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে নানা অজুহাতে সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সম্প্রতি আরও টাকা নেওয়ার জন্য আবার শ্বশুরবাড়িতে গেলে পরিবারের সদস্যরা ফয়সালের আচরণ ও বক্তব্যে অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন।
পরিবারের সদস্যরা তার পরিচয়পত্র ও চাকরির প্রকৃত তথ্য জানতে চাইলে ফয়সাল বিষয়টি এড়িয়ে যেতে থাকেন। এতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হলে তারা ফয়সালকে আটকে রেখে কাশিয়ানী আর্মি ক্যাম্পে খবর দেন। পরে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এই ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, এ ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে নারীদের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপকর্ম করতে না পারে। পুলিশ জানায়, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।