সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি না হলেও জেলার প্রায় সব নদ-নদী ও হাওরে পানি বেড়েছে। বিশেষ করে সুরমা নদীর পানি বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, উজানের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় পানি বাড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টি থেমে থেমে হচ্ছে, কিন্তু ভারী বর্ষণ হয়নি। তবে উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে নদী ও হাওরে পানি টইটম্বুর হয়ে উঠেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, যদি আবার ভারী বৃষ্টি শুরু হয়, তাহলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে।
পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে সুরমা নদীর পানি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৮ মিটারে, যা বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার নিচে। গতকাল একই সময় এই পানি ছিল ৬ দশমিক ৯৭ মিটার।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ১৮ মিলিমিটার এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১৬ মিলিমিটার। পাউবোর কর্মকর্তারা বলছেন, এই কম বৃষ্টিকে স্বস্তির বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ এতে করে ঢলের চাপ কিছুটা কমবে এবং পানির স্তর স্থিতিশীল থাকবে।
তবে জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে ইতিমধ্যেই পানি ঢুকেছে। সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক ও জগন্নাথপুরের কিছু এলাকায় নিচু জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
দোয়ারাবাজার ও তাহিরপুর উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড় দল ইউনিয়নে ঢলের তোড়ে কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা গ্রামের বাসিন্দা সবুজ আলম বলেন, টানা বৃষ্টিতে সবজি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর প্রভাব পশুর হাটেও পড়েছে, জমজমাট হয়নি হাটগুলো।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, আপাতত বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই। তবে আবার বৃষ্টি হলে নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জবাসীর আশঙ্কা এবং প্রস্তুতির এই মুহূর্তে স্বস্তির খবর হলো, উজান ও স্থানীয়ভাবে বৃষ্টিপাত কমছে। তবে প্রাকৃতিক বৈরিতার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।