‘দাবি মোদের একটাই, মেয়র ছাড়া অফিস নাই’—ইশরাক সমর্থকদের বিক্ষোভে অচল নগর ভবন

News Desk

‘দাবি মোদের একটাই, মেয়র ছাড়া অফিস নাই’—ইশরাক সমর্থকদের বিক্ষোভে অচল নগর ভবন. Dhakainlight.com

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর দাবিতে টানা অবস্থান কর্মসূচি চলছে নগর ভবনে। আজ সোমবার আন্দোলনের ২০তম দিনে ঢাকাবাসী ব্যানারে নগর ভবনের মূল ফটকে বিক্ষোভ করেন ইশরাক-সমর্থক ও করপোরেশনের কর্মচারীরা। তাঁদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ভবন এলাকা—‘দাবি মোদের একটাই, মেয়র ছাড়া অফিস নাই’, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা চলবে না’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’।

আজও নগর ভবনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ ছিল। আন্দোলনকারীরা নিয়মিত বিরতিতে স্লোগান দিতে থাকেন এবং ভবনে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে শুরু হওয়া এই আন্দোলন গত ১৪ মে থেকে চলছে। মাঝে ৪৮ ঘণ্টার বিরতি থাকলেও পরবর্তীতে তা আবার পুরোদমে শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, নগর ভবনের অভ্যন্তরে জনতা ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের দুটি শাখা খোলা থাকলেও করপোরেশনের অন্যান্য কার্যক্রম পুরোপুরি অচল। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অঘোষিত ছুটিতে চলে গেছেন। শুধুমাত্র পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কাজ আংশিকভাবে চলমান রয়েছে।

ওয়ারী থানার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক বলেন, “উচ্চ আদালতের রায় দেওয়ার পরও মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানো পরিকল্পিত গড়িমসি। এর পেছনে কিছু উপদেষ্টার ভূমিকা রয়েছে। আমরা ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছি। এবার নব্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধেও লড়ব।”

দুপুর ১২টার দিকে নগর ভবনে জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত কাজের জন্য আসা শিক্ষার্থী রিপন আলী হতাশ হয়ে বলেন, “আদালতের রায় হওয়ার পর ভেবেছিলাম সব স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে এসে দেখি এখনও সব বন্ধ।”

এদিকে আন্দোলনের কারণে শুধু জনসেবা নয়, দাপ্তরিক ও আর্থিক কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে। নগর ভবনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “নগর ভবনের সব কাজ বন্ধ থাকলেও ব্যাংকিং কার্যক্রম খোলা রয়েছে। সামনে ঈদ, তাই বেতন তুলতে এসেছিলাম।”

চিকিৎসাসেবা, জন্মনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্সসহ প্রতিদিনকার গুরুত্বপূর্ণ সেবা নিতে এসে প্রতিদিনই ফিরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সিটি করপোরেশনের চলমান সংকটে নাগরিক ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

বর্তমানে নগর ভবনে থাকা ‘জুলাই আহত ব্যক্তি’সহ আন্দোলনকারীরা এক দফা দাবিতে অনড়—ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়াতে হবে। না হলে আন্দোলন চলবে আরও কঠোরভাবে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারি পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা সমাধানের ইঙ্গিত মেলেনি। আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে নগরবাসীর দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Footer Section