চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের এক কর্মসূচিতে এক নারীকে লাথি মারার ঘটনায় বহিষ্কৃত জামায়াতে ইসলামীর কর্মী আকাশ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার বিকেলে নগরের কোতোয়ালি এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম জানিয়েছেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আকাশকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়েছে এবং তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পটভূমি
গত ২৮ মে বুধবার চট্টগ্রামে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম খালাস পাওয়ার প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট একটি কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচি শুরুর কিছুক্ষণ পরেই সেখানে মিছিল নিয়ে হাজির হয় ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ নামে একটি দল। দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং পুলিশ হস্তক্ষেপ করে। সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আহত হন।
ভিডিওতে ধরা পড়ে হামলার দৃশ্য
ঘটনার একটি ১৫ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার পর প্রেসক্লাবের পাশে একটি ভবনের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা। সেখানে উপস্থিত একজন পুলিশ সদস্যের চোখ এড়িয়ে এক ব্যক্তি পেছন থেকে এক নারীসহ দুইজনকে লাথি মারেন। ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ওই ব্যক্তিই আকাশ চৌধুরী।
দলীয় সিদ্ধান্ত ও বহিষ্কার
হামলার ঘটনায় সমালোচনার মুখে জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগর শাখা দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ৩০ মে রাতে দলের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নারীকে লাথি মারার ঘটনায় আকাশ চৌধুরীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
পুলিশি ব্যবস্থা
পুলিশ হামলার পরপরই ওবাইদুর ও সেলিম নামে দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। কোতোয়ালি থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করা হয়, যেখানে আটক দুজনের নামসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় বলা হয়, আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং যান চলাচলে বাধা দেয়।
এই ঘটনার পর আকাশ চৌধুরীকে আইনের আওতায় আনা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও ছাত্র সংগঠনগুলো।