যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে ওঠা মাদক ব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। গতকাল শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এ কথা বলেন।
পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী সমাবেশ শেষে ওভাল অফিসে ফিরে ট্রাম্প সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ তুলে ইলন মাস্কের মাদক সেবনের বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি ইলন একজন অসাধারণ মানুষ। তাঁকে নিয়ে আমার কোনো উদ্বেগ নেই। আমার মতে তিনি দারুণ একজন ব্যক্তি।”
এর আগে নিউইয়র্ক টাইমসের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, প্রযুক্তি দুনিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক অতীতে যতটা মাদক সেবনের অভিযোগে আলোচনায় ছিলেন, বাস্তবে তিনি তার চেয়েও অনেক বেশি মাত্রায় মাদক ব্যবহার করেন। প্রতিবেদনে এমন ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি দেওয়া হয় যারা মাস্কের ঘনিষ্ঠ এবং বিষয়টি সম্পর্কে অবগত।
ওভাল অফিসে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইলন মাস্কও। প্রশ্ন উঠতেই মাস্ক সাংবাদিককে থামিয়ে দেন এবং সরাসরি বলেন, “এসব বাদ দিন, পরের বিষয়ে কথা বলুন।” একইসঙ্গে তিনি নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টের নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
সিএনএন জানিয়েছে, ইলন মাস্ক ও তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা কোনো মন্তব্য করেননি। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরে মাস্কের প্রভাব বাড়ার সময় থেকেই তিনি আরও বেশি মাত্রায় মাদক সেবন করেছেন বলে ধারণা করা হয়। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অংশ থাকার সময় তিনি মাদক সেবন করেছেন কি না—সে বিষয়ে কোনো নিশ্চিত তথ্য মেলেনি।
এই বিতর্কের মধ্যেই রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে মাস্কের হোয়াইট হাউস সংশ্লিষ্টতা ও তাঁর কর্মকাণ্ড ঘিরে। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিভিন্ন গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এদিকে গত ১৮ ঘণ্টার মধ্যে মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যকার প্রশাসনিক টানাপড়েন নিয়েও আলোচনা হয়েছে, যেখানে মাস্ক কিছু নীতিগত বিরোধের কারণে প্রশাসনের একাংশ থেকে সরে দাঁড়ান বলে দাবি করা হয়।
এই ঘটনা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নয়, প্রযুক্তি ও ব্যবসা জগতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইলন মাস্কের মতো একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের মতো অভিযোগ আগামী দিনে তাঁর ভাবমূর্তি ও নীতি-সম্পৃক্ত কার্যক্রমে কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটি এখন সময়ই বলে দেবে।