হার্ভার্ডের সঙ্গে সব ফেডারেল চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ ট্রাম্প প্রশাসনের

News Desk

হার্ভার্ডের সঙ্গে সব ফেডারেল চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ ট্রাম্প প্রশাসনের. Dhakainlight.com

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাকি থাকা সব ফেডারেল চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে। মঙ্গলবার ফেডারেল সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ সেবা প্রশাসন (জিএসএ)। এতে সংস্থাগুলোকে হার্ভার্ডের সঙ্গে চলমান সব চুক্তি পর্যালোচনা করে বাতিল বা পুনর্বণ্টনের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এসব চুক্তির আনুমানিক মূল্য ১০ কোটি ডলার।

হার্ভার্ড প্রশাসন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের এটাই প্রথম আক্রমণ নয়। এর আগেও প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের গবেষণা অনুদান বাতিল এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। হার্ভার্ডে বর্তমানে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৬,৮০০—যা তাদের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২৭ শতাংশ।

চলমান বিরোধের পেছনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা ও ভর্তিনীতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের অনুপালিত পরিবর্তন চাওয়া। হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করায় প্রশাসনের একের পর এক চাপ ও শাস্তিমূলক সিদ্ধান্তের শিকার হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সম্প্রতি ক্যাম্পাসে বর্ণভিত্তিক ভর্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পর হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক ভর্তিনীতির অভিযোগ তোলে প্রশাসন।

জিএসএর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৬ জুনের মধ্যে ফেডারেল সংস্থাগুলোকে হার্ভার্ডের সঙ্গে বাতিলযোগ্য সব চুক্তির তালিকা জমা দিতে হবে। একই সঙ্গে সেবা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিগুলো বিকল্প সরবরাহকারীদের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিতে হবে।

এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড ইতিমধ্যে আইনি লড়াই শুরু করেছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রশাসনের এ ধরনের ত্বরিত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াগত নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এবং প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকেও খর্ব করেছে।

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, “ক্যাম্পাসে কিছু সমস্যা আছে, তা আমরা স্বীকার করি। কিন্তু গবেষণা অনুদান ও ভর্তির সুযোগ বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত বিভ্রান্তিকর। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে হার্ভার্ড দেশের সেবাই প্রধান দায়িত্ব মনে করে এসেছে।”

এদিকে প্রশাসনের এসব পদক্ষেপের প্রতিবাদে গতকাল শত শত শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা সরকারের ‘দমনমূলক নীতির’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের এমন পদক্ষেপকে অনেকেই উচ্চশিক্ষা, একাডেমিক স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত শিক্ষা ব্যবস্থায় এই উত্তেজনা ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

Footer Section