সচিবালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও চট্টগ্রাম বন্দরে চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এসব স্থানে যারা স্ট্রাইক করছেন, তাঁদের মনে রাখা উচিত—বিপ্লব সেখানেও হবে।
সোমবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আজ সচিবালয়, এনবিআর কিংবা পোর্টে যাঁরা স্ট্রাইক করছেন, তাঁদের বলছি—বিপ্লব ওখানেও হবে। আপনারা দুর্নীতি আর লুটপাটের স্বাধীনতা চাচ্ছেন, কিন্তু চব্বিশ-পরবর্তী সময়ে এটা আর পাবেন না। হাসিনার শাসনামলে গুম, খুন, দুর্নীতি, অর্থ পাচারের যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে, তার সহযোগী আপনারাই। ভাববেন না, পার পেয়ে গেছেন। পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, সরকারের উচিত এসব দুর্নীতিগ্রস্তদের অবিলম্বে অপসারণ করে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এর আগে সকালে চট্টগ্রামে এক কর্মসূচিতে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সরকারকে যারা জিম্মি করার চেষ্টা করবে, তাদের বিকল্প জনগণই খুঁজে নেবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি তার হুঁশিয়ারি ছিল, যদি সংস্কারে বাধা দেওয়া হয় বা হুমকি-ধমকি চলতে থাকে, তাহলে প্রতিরোধ আসবে কঠোর হাতে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সরকারি চাকরি (সংশোধন) আইন ২০২৫ অধ্যাদেশ আকারে জারি হওয়ার পর সচিবালয় ও বিভিন্ন দপ্তরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই অধ্যাদেশে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও সহজে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান অন্তর্ভুক্ত থাকায় তা ‘নির্যাতনমূলক’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানায় সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন।
এদিকে, এনবিআর বিভাজন করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারির পর এনবিআরের কর্মীরাও কয়েক দিন ধরে অবস্থান ও কর্মবিরতি পালন করেন। সরকারের আশ্বাসের পর রোববার রাতেই তাঁরা কর্মসূচি স্থগিত করেন। তবে চেয়ারম্যান অপসারণের দাবি অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে হস্তান্তরের প্রতিবাদেও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
চলমান এসব আন্দোলন নিয়ে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট মহলে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মাঝেই এনসিপি নেতাদের এমন হুঁশিয়ারি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে।