পুলিশের ওপর হামলা এবং গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এই আদেশ দেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে।
এর আগে ১৮ মে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাতেও তাকে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন জানান, চিন্ময় দাসের রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর দায়ের করা মামলায় চিন্ময়কে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আদালত শুনানি শেষে তার অনুমতি দেন।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় সহিংসতা দেখা দেয়। ওই ঘটনায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা হন। হত্যার ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যেখানে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এর পাশাপাশি আরও পাঁচটি মামলা হয় পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, বিচারকাজে বাধাদান এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে। মোট ছয়টি মামলায় ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের মধ্যে ২১ জন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন আসামি—চন্দন দাস, রিপন দাস এবং রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, রিপন দাস আইনজীবী সাইফুলের ঘাড়ে বঁটি দিয়ে কোপ দেন, চন্দন দাস কিরিচ দিয়ে আঘাত করেন এবং পরে ১৫ থেকে ২০ জন মিলে ইট, লাঠি, বাটাম, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেন।
এছাড়া, গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকার বিএনপি নেতা ফিরোজ খান কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকার একটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। আদালতের আদেশ অনুসারে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে নির্ধারিত সময়ে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।