‘দ্য লাস্ট অব আস’ আবারও প্রমাণ করল, অ্যাকশন ছাড়াও অসাধারণ ও হৃদয়বিদারক হওয়া সম্ভব

News Desk

‘দ্য লাস্ট অব আস’ আবারও প্রমাণ করল, অ্যাকশন ছাড়াও অসাধারণ ও হৃদয়বিদারক হওয়া সম্ভব. Dhakainlight.com

চার সপ্তাহ আগে এইচবিও-র জনপ্রিয় সিরিজ ‘দ্য লাস্ট অব আস’ দর্শকদের চমকে দিয়েছিল একটি বড় কাস্টিং পরিবর্তনের মাধ্যমে। তবে এবারের ষষ্ঠ পর্বে দেখা গেল, সেই শোক কাটিয়ে ফিরেছেন দর্শকপ্রিয় চরিত্র জোয়েল, যাঁর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন পেদ্রো প্যাসকেল।

দ্বিতীয় পর্বে মৌসুমি খল চরিত্র অ্যাবির (কেইটলিন ডেভার) হাতে জোয়েলের মৃত্যু হলেও, ষষ্ঠ পর্বে ফিরেছেন তিনি একটি আবেগঘন ফ্ল্যাশব্যাকে। পর্বটি এলির (বেলা র‍্যামসি) ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত জন্মদিনের স্মৃতিময় মুহূর্তগুলোর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত, যেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন হয় এলি ও জোয়েলের মধ্যে।

এই ফ্ল্যাশব্যাক পর্বটি অনেকটা প্রথম মৌসুমের প্রশংসিত ‘লং, লং টাইম’ পর্বের মতো—যেখানে নিক অফারম্যান ও মুরি বার্টলেট অভিনীত হৃদয়বিদারক প্রেমকাহিনি তুলে ধরা হয়েছিল। অফারম্যান এই পর্বের জন্য এমি পুরস্কারও জিতেছিলেন।

সিরিজের স্রষ্টা ও নির্বাহী প্রযোজক নীল ড্রাকম্যান সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘‘লং, লং টাইম’ পর্বটি আমাদের সাহস দিয়েছিল। দেখিয়েছিল, একটি জম্বি-ভিত্তিক সিরিজেও শুধু দুই চরিত্রের আবেগঘন নাটক দিয়ে পুরো পর্ব পরিচালনা করা সম্ভব।’’

ভিডিও গেমে যেখানে এই জন্মদিনের মুহূর্তগুলো সময়ের সঙ্গে ছড়িয়ে ছিল, সেখানে টিভি সিরিজে এক পর্বেই তা দেখানোর সিদ্ধান্ত ছিল সচেতনভাবে নেওয়া। ড্রাকম্যান বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম, জোয়েলের মৃত্যুর পর যথেষ্ট সময় যাক—যাতে চরিত্ররা তাঁকে মিস করে, দর্শকও মিস করে।’’

পর্বের আবেগঘন পরিণতি আসে ইউজিন (জোই প্যান্টোলিয়ানো) নামের এক চরিত্রের মাধ্যমে, যিনি গেইল (ক্যাথরিন ও’হারা)-এর স্বামী। এলির ১৯তম জন্মদিনে তারা প্যাট্রোলে গিয়ে ইউজিনের সংস্পর্শে আসে। জানা যায়, ইউজিন আক্রান্ত হয়েছেন, কিন্তু এখনো রূপান্তরিত হননি।

ইউজিন অনুরোধ জানান, তিনি যেন গেইলের সঙ্গে শেষবার দেখা করতে পারেন। এলি এতে সম্মত ছিলেন এবং জোয়েল তাকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তিনি এটি বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, জোয়েল ইউজিনকে পানির ধারে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করেন এবং গেইলকে মিথ্যে বলেন। বিষয়টি জানার পর এলি গভীরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

ড্রাকম্যান বলেন, ‘‘এই মিথ্যেটাও ঠিক মৌসুম ১–এর মিথ্যার মতোই। উদ্দেশ্য ছিল এলিকে রক্ষা করা। কিন্তু ফলাফল হয় উল্টো—এলি নিশ্চিত হয়ে যায়, জোয়েল মিথ্যে বলেন। ঠিক যেমন তিনি মৌসুম ১–এর শেষে জ্যাকসন শহরের পাশে পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মিথ্যে বলেছিলেন।’’

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটেই তৈরি হয় জোয়েল ও এলির মধ্যকার চাপা ক্ষোভ, যা মৌসুম ২–এর প্রথম পর্বেই ইঙ্গিত দিয়ে ছিল। সবশেষে পর্বের এক দৃশ্যে, যখন তারা বারান্দায় বসে অতীত ঘটনার মুখোমুখি হয়, তখন সেই চাপ ভেঙে পড়ে—এবং এলি জোয়েলের মুখে জানতে পারেন হাসপাতালের সত্য ঘটনা।

ড্রাকম্যান বলেন, ‘‘তারা তাদের দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে পৌঁছায়, আবার একই সঙ্গে শো-এর মূল থিম—নির্বিচার ভালোবাসা—তাও স্পষ্ট হয়। এমনকি কেউ কাউকে কষ্ট দিলেও ভালোবাসা শেষ হয় না।’’

এলি তাঁর প্রতি করা অন্যায়ের জন্য জোয়েলকে ক্ষমা করে দেন, যদিও তা সহজ ছিল না।

পর্বের শেষে এলিকে দেখা যায়, নোরা-কে নির্যাতন ও হত্যা করার পর আবার থিয়েটারে ফিরে আসতে। ড্রাকম্যান বলেন, এই ফ্ল্যাশব্যাকগুলো একটি স্মৃতিচারণ, যা মনে করিয়ে দেয় এলির অতীত সত্তা এবং এখনকার অন্ধকার রূপের মধ্যকার ব্যবধান।

তিনি বলেন, ‘‘এলি এখন এমন এক ব্যক্তি, যিনি ভয়ংকর সহিংসতায় সক্ষম। প্রশ্ন হচ্ছে—এই অন্ধকারে পা রাখার পর কি আর ফিরে আসা সম্ভব? এই চক্র থামানো কি আদৌ সম্ভব?’’

সিরিজের শেষ পর্ব প্রচারিত হবে ২৫ মে। ড্রাকম্যান জানান, ‘‘সবকিছু চূড়ান্ত দিকে এগোচ্ছে। অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও বাকি। একটি পর্ব বাকি থাকলেও, অনেক কিছু ঘটতে যাচ্ছে।’’

‘দ্য লাস্ট অব আস’ সম্প্রচারিত হয় প্রতি রবিবার রাত ৯টায় এইচবিও-তে। স্ট্রিমিং-এর জন্য এটি দেখা যায় ম্যাক্স-এ। উল্লেখ্য, এইচবিও ও ম্যাক্স, উভয়ই সিএনএনের মূল কোম্পানি ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি’র অধীনে।

Leave a Comment

Footer Section