রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় বাবা ও পাঁচ বছর বয়সী মেয়ের ডান পা হাঁটুর ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহত হয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা মা-ও। সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে বাঘা পৌর এলাকার বানিয়াপাড়ায় বাঘা-ঈশ্বরদী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন জাহেদুল ইসলাম (২৭), তাঁর স্ত্রী জেসমিন আক্তারি (২৪) এবং তাঁদের মেয়ে উম্মে তুরাইফা খাতুন (৫)। পরিবারটির বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার বেরিলাবাড়ি গ্রামে। দুর্ঘটনার পরপরই তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নেওয়া হয়।
পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাহেদুল, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে এক মোটরসাইকেলে করে বাঘা উপজেলার একটি স্কুলে যাচ্ছিলেন। বানিয়াপাড়ায় পৌঁছালে বাঘা থেকে ঢাকাগামী ‘সুপার সনি’ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং তিনজন রাস্তায় ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলেই জাহেদুল ও তুরাইফার পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং জেসমিন আক্তারের ডান হাত ভেঙে যায়।
আহত জাহেদুলের এক স্বজন জানান, জেসমিনকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জাহেদুল ও তুরাইফাকে দ্রুত ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন, তবে তাঁদের শারীরিক অবস্থা দীর্ঘপথের যাত্রার উপযোগী নয়।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, আহত বাবা ও মেয়েকে বিচ্ছিন্ন পাসহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাঁদের ঢাকায় নেওয়া গেলে বিচ্ছিন্ন অঙ্গ সংযুক্ত করার সম্ভাবনা থাকলেও দেরি হলে তা আর সম্ভব নাও হতে পারে।
দুর্ঘটনার পর বাসচালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান। তিনি বলেন, বাস ও মোটরসাইকেল জব্দ করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দ্রুতগামী বাসগুলোর বেপরোয়া চালনার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে কঠোর নজরদারি ও আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।