যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য যেকোনো চুক্তিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। গতকাল রোববার এবিসির ‘দিস উইক’ নামের এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
স্টিভ উইটকফ বলেন, “আমাদের একটি স্পষ্ট সীমারেখা রয়েছে—তা হলো সমৃদ্ধকরণ। এমনকি ১ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতাও আমরা মেনে নিতে পারি না।” তাঁর এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তেহরান।
ইরানের আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানায়, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি উইটকফের বক্তব্যকে ‘অবাস্তব প্রত্যাশা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “অবাস্তব প্রত্যাশাই আলোচনা থামিয়ে দেয়। ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমি মনে করি, উইটকফ আলোচনার বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।”
স্টিভ উইটকফ সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, “আমি আশাবাদী যে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক বিষয়ে আগামী দিনগুলোতে আলোচনা এগিয়ে যাবে। আমরা আশা করছি, ইউরোপে হতে যাওয়া আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হবে।”
এদিকে, ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচিও জানিয়েছেন, পরবর্তী আলোচনার সময় ও স্থান শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।” তবে শুক্রবার তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ইরানের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।”
উল্লেখ্য, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে ট্রাম্প প্রশাসন একতরফাভাবে সরে আসার পর দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চরমে পৌঁছায়। এরপর থেকে উভয় পক্ষই একাধিকবার নতুন আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে মতপার্থক্য থেকে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমকে ভবিষ্যতের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির আশঙ্কা হিসেবে দেখছে, যদিও ইরান শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত।