ক্রিকেটের প্রতি বরাবরই একটা দুর্বলতা ছিল অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদের। তবে এবার শুধু গ্যালারিতে বসে চিৎকার করে উৎসাহ দেওয়া নয়, ব্যাট-বল হাতে নেমে পড়লেন মাঠে। সেলিব্রিটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে টিম টাইটানের হয়ে মাঠে লড়েছেন তিনি। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? মৌসুমীর কথায়, “আগে ভাবতাম, ব্যাটসম্যান মেরে ফেলতে পারছে না কেন! এখন মাঠে নেমে বুঝলাম, ক্রিকেট কতটা কঠিন। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে গ্যালারিতে বসে আর কোনো মন্তব্য করব না!”
বাবার হাত ধরে খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা
মৌসুমীর বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, পাশাপাশি ছিলেন ক্রীড়ামোদী। বাড়িতে টেলিভিশনে খেলা দেখতেন নিয়মিত, পাশে বসে সেই খেলা উপভোগ করতেন ছোট্ট মৌসুমী। আফ্রিদি, শোয়েব আখতার, রিকি পন্টিং কিংবা ক্রিস গেইলের খেলা দেখে তৈরি হয় খেলাপ্রীতি। বাবাও ছিলেন ভলিবল খেলোয়াড়, এমনকি জাতীয় দলে খেলেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পেয়েছেন পুরস্কার। বাবার অনুপ্রেরণায় সাতক্ষীরার মেয়ে মৌসুমীর মধ্যে ছোটবেলা থেকেই গড়ে ওঠে খেলাধুলার প্রতি গভীর ভালোবাসা।
প্রথমবার সিরিজে, প্রথমবার অমিতাভ রেজার সঙ্গে কাজ
অভিনয়ে ব্যস্ত মৌসুমী এবার প্রথমবার একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করলেন—নাম ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। অমিতাভ রেজার পরিচালনায় এক মৌয়ালের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এই নির্মাতার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ছিল বহুদিনের। ‘একটা ফোন করা যাবে প্লিজ’ দেখার পর থেকেই তিনি অমিতাভ রেজার গল্প বলার ধরনে মুগ্ধ। মৌসুমীর কথায়, “উনি অনেক সিরিয়াস বিষয়ও অনেক হালকা ঢঙে বলে ফেলেন, সেটাই অসাধারণ লাগে।”
সুন্দরবনের মধু সংগ্রহকারী নারীদের জীবনের সঙ্গে পরিচিতি ছিল মৌসুমীর আগে থেকেই। সেই চেনা জগতের নারীর চরিত্রে অভিনয় করে আরও বেশি নিজের সঙ্গে সংযোগ পেয়েছেন তিনি।
ঈদের জন্য আধা ডজন নাটক, সিনেমায় ভাবনা স্পষ্ট
সামনের ঈদে মৌসুমী হামিদ থাকছেন একাধিক নাটকে। ইতিমধ্যে শুটিং শেষ করেছেন ছয়টি নাটকের। নাটকের গল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তিনি বেশ সচেতন—শুধু বড় চরিত্র নয়, এমন চরিত্র চান যার একটা নিজস্ব যাত্রা আছে। ছোট হলেও তাতে থাকতে হবে গভীরতা। তাঁর কথায়, “সব চরিত্রে স্বচ্ছন্দ বোধ করি না। চরিত্রে গল্প, উদ্দেশ্য, যাত্রা না থাকলে কাজ করতেও ভালো লাগে না।”
গত বছর মুক্তি পেয়েছিল তাঁর চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। এরপর বেশ কিছু সিনেমার প্রস্তাব পেলেও রাজি হননি। কারণ, তিনি বিশ্বাস করেন, একজন শিল্পীকে এমন চরিত্রে কাজ করতে হবে যার ভিতরে একটি পরিপূর্ণতা থাকে। শুধু ‘নায়িকা’ হিসেবে পর্দায় থাকাই যথেষ্ট নয়।
সিনেমা দেখা এবং স্বপ্নের চরিত্র
সময়ের সুযোগ পেলেই সিনেমা দেখেন মৌসুমী। সম্প্রতি দেখেছেন ‘অ্যাডোলসেন্স’, ভীষণ মুগ্ধ হয়েছেন। ফেউ সিরিজটাও তাঁর ভালো লেগেছে। এখন ‘গুলমোহর’ দেখার অপেক্ষায় আছেন। কিছু কিছু সিনেমা তাঁকে নতুন কল্পনার জগতে নিয়ে যায়। যেমন ‘দ্য ট্যুরিস্ট’—যেখানে অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে দেখে তিনি নতুন করে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তাঁর স্বপ্ন—একদিন এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করবেন যা কেবল অভিনয় নয়, হয়ে থাকবে শিল্পের উদাহরণ।