ঢাকায় সচিবালয় ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ডিএমপি

News Desk

. Dhakainlight.com

রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সচিবালয়, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা এবং এর আশপাশের এলাকায় আবারও সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত ও শোভাযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আজ ১০ মে শনিবার ডিএমপির এক আনুষ্ঠানিক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জননিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় যেসব এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড়, অফিসার্স ক্লাব মোড় এবং মিন্টু রোড। এইসব এলাকায় যে কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল বা শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ডিএমপির ভাষ্যমতে, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর রাজনৈতিক উত্তেজনা, কৌশলগত স্থানসমূহে নিরাপত্তা হুমকি এবং সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা আরও জানায়, নিরাপত্তাবাহিনী সবসময় এলাকাগুলো মনিটর করছে এবং কোনো ব্যতিক্রমী বা সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিএমপি’র গণবিজ্ঞপ্তিতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়, কেউ যেন এই নির্দেশ অমান্য না করেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করেন।

এর আগে গত বছরের ২৬ আগস্টও সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের আশপাশে সব ধরনের গণজমায়েত ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছিল ডিএমপি। সে সময়েও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আদেশটি বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞা মূলত দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নেওয়া একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। তবে গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নে কিছু মহলে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। যদিও সরকারপক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ জননিরাপত্তার স্বার্থে এবং নাগরিকদের নিরাপদ চলাফেরার পরিবেশ বজায় রাখতেই এটি জরুরি।

সচিবালয় ও এর আশপাশের এলাকাগুলো দেশের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায়, সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সব সময়েই সরকারের একটি অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে রাজনৈতিক সমাবেশ ও গণআন্দোলনের প্রবণতা বাড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল এলাকায় এ ধরনের পদক্ষেপ একদিকে যেমন বিশৃঙ্খলা রোধে সহায়ক, অন্যদিকে নাগরিক স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা নিয়েও নতুন করে ভাবনার দরজা খুলে দেয়।

এই মুহূর্তে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করেই ডিএমপি ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা সংশোধন বা প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে এর মধ্যে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান, কেউ যেন অপ্রচারের শিকার না হন এবং সরকারের ঘোষিত নির্দেশাবলির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন।

Dhakainlight

Leave a Comment

Footer Section