০৯ মে ২০২৫, ১৬:৫৬
দেশের তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এমন অনেক ব্যাংক এখনো ২০২৪ সালের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে পারেনি। এই অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক আইনি বাধ্যবাধকতা শিথিল করে এসব ব্যাংককে প্রতিবেদন জমার জন্য ৩১ মে ২০২৫ পর্যন্ত সময় দিয়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত জানায়।
নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর্থিক বছর শেষ হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে নিরীক্ষিত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিনিয়োগকারীদের জানাতে হয়। তবে এবার সেই নিয়ম মেনে চলতে না পারায় সময়সীমা বাড়ানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, বেশ কিছু বেসরকারি ও রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি।
ব্যাংক খাতের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি পরিপালন করতে গিয়ে বহু ব্যাংক প্রতিবেদন তৈরি করেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনাপত্তি পায়নি। এমনকি কিছু ব্যাংককে প্রাথমিকভাবে অনাপত্তি দিয়ে পরে তা প্রত্যাহারও করা হয়েছে। ফলে তাদের অনেককে পর্ষদ সভা বাতিল করতে হয়েছে, যা লভ্যাংশ ঘোষণার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করেছে।
এ ছাড়া গত মার্চে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি নতুন নীতিমালা জারি করে, যেখানে বলা হয়—যেসব ব্যাংক নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে ব্যর্থ এবং বিলম্ব সুবিধা নিয়েছে, তারা ২০২৪ সালের জন্য কোনো লভ্যাংশ দিতে পারবে না। এ বিধিনিষেধ আরও জটিলতা তৈরি করেছে। একই সঙ্গে ৫ আগস্টের পর মালিকানা বা ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসা ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থান নিয়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর ব্যাংকগুলোর সুবিধার্থে এই সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে জমা দিতে না পারলে পরবর্তী সময়ে কোনো বাড়তি সময় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকিং খাতের বিশ্লেষকদের মতে, এই সময় বৃদ্ধি সাময়িকভাবে কিছুটা স্বস্তি দিলেও ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, প্রভিশনিং এবং খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা প্রমাণ করে। ফলে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে এসেছে আলোচনায়।