প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল | ০৯ মে ২০২৫, ১৭:০৫
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় চুরি হওয়া গাভি ও বাছুর উদ্ধার করে ফেরত দেওয়ার সময় পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। গাভির মালিক ফজলু শেখের ভাগনে উজ্জ্বল সিকদার এ অভিযোগ করেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে।
অভিযোগে বলা হয়, চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ আলী হাসান গাভি ও বাছুর ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে ফজলু শেখের পরিবারের কাছে ঘুষ দাবি করেন। ঘটনার সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার রাতে, যখন ফজলু শেখের গোয়ালঘর থেকে একটি গাভি ও বাছুর চুরি হয়ে যায়। পুলিশ পরে কদিমধল্যা এলাকা থেকে আল-আমিন নামের এক চোরকে গ্রেপ্তার করে এবং তার হেফাজতে থাকা পিকআপ থেকে চুরি হওয়া গরুগুলো উদ্ধার করে।
চুরির শিকার গরু শনাক্ত করার পর মালিকপক্ষ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে গরু ফেরত চায়। কিন্তু তাদের অভিযোগ, এসআই আলী হাসান নানা অজুহাতে গড়িমসি করেন এবং পরে বিএনপির স্থানীয় দুই নেতার উপস্থিতিতে ফোনে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। যদিও মালিকপক্ষ ১০ হাজার টাকা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তা নাকচ করে দেন এসআই।
এই ঘটনার ভিডিও রেকর্ড বা কল রেকর্ড না থাকলেও প্রত্যক্ষদর্শী ও মধ্যস্থতাকারী দুই বিএনপি নেতা—ভাওড়া ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক হোসেন ও ভাতগ্রাম ইউনিয়নের সভাপতি বজলুর রহমান—প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, এসআই আলী হাসান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, মালিকপক্ষকে আদালতের মাধ্যমে আবেদন করতে বলা হয়েছিল এবং ঘুষের বিষয়টি মিথ্যা। তাঁর ভাষ্য, ‘কার কাছে টাকা চেয়েছি, তাঁকে সামনে আসতে বলেন।’
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ বেআইনি কিছু করে থাকে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব গরু উদ্ধার করে মালিককে তা হস্তান্তর করা—না যে এর জন্য ঘুষ নিতে হবে।