ঢাকা ইনলাইট আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ৯ মে ২০২৫
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে ভ্যান্স বিদেশি দর্শকদের নিয়ে এক বিতর্কিত “রসিকতা” করেন, যা অনেকেই হুমকি হিসেবে দেখছেন।
বক্তব্যে ভ্যান্স বলেন, “অবশ্যই সবাইকে এই অসাধারণ ইভেন্ট দেখতে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। আমরা চাই তারা আসুক, আনন্দ করুক, খেলা উপভোগ করুক। তবে, সময় শেষ হলে তাদের বাড়ি ফিরতে হবে। না হলে, তাদের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোএমের সঙ্গে কথা বলতে হবে।”
এই বক্তব্যের সময় তিনি পাশে তাকিয়ে হেসে উঠেন, যা অনেকেই অস্বস্তিকর ও বৈষম্যমূলক বলে মন্তব্য করেছেন। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির পটভূমিতে এই “রসিকতা” আরও শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, এটি নিছক মজার ছলে বলা হয়নি—এটা ছিল এক প্রকার সতর্কবার্তা। “বিশ্বকাপে না আসাই ভালো, বিশেষ করে যদি আপনি বাদামি বা কৃষ্ণাঙ্গ হন,”—এমন মন্তব্য ঘুরছে টুইটারে। অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “বিশ্বব্যাপী আয় করা সবচেয়ে বড় আয়োজনে এভাবে আতঙ্ক ছড়ানো একমাত্র ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষেই সম্ভব।”
বিশ্বকাপের মতো একটি আন্তর্জাতিক আয়োজন, যা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো তিনটি দেশ মিলিয়ে আয়োজিত হচ্ছে, সেখানে এমন বক্তব্য বহু দেশ ও দর্শকের মধ্যে ভীতি ও সন্দেহ তৈরি করছে। অনেকেই বলছেন, এভাবে আন্তর্জাতিক অতিথিদের সম্পর্কে সংশয় তৈরি করা কেবল কূটনৈতিকভাবে অশোভন নয়, অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিকর।
২০২৬ বিশ্বকাপে ১০০টিরও বেশি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ৬.৫ মিলিয়ন দর্শক আগমন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রায় ১৭.২ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে অবদান পড়বে বলে অনুমান।
তবে ভ্যান্সের মন্তব্য এই ইতিবাচক চিত্রে ছায়া ফেলেছে। বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসনের আগের আমলে কঠোর অভিবাসন নীতি, ‘মুসলিম ব্যান’ ও আইস (ICE) অভিযানের কথা অনেকেই স্মরণ করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টগুলোর কূটনৈতিক গুরুত্ব যেমন বড়, তেমনি এর মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি তৈরি হয়। সেই জায়গায় এমন মন্তব্য মার্কিন ভাবমূর্তি ও বিশ্বব্যাপী অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে।