এক শিশুর ভুল ক্লিকে অর্ডার হয়ে গেল ৭০ হাজার ললিপপ

News Desk

মুঠোফোন এখন শুধু বড়দের নয়, ছোটদের কাছেও নিত্যসঙ্গী। শিক্ষামূলক অ্যাপ, কার্টুন কিংবা গেম—সব কিছুই এখন হাতের মুঠোয়। তবে এই আধুনিক সুবিধা মাঝে মাঝে বড় বিপদের কারণও হয়ে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যে ঘটে গেছে ঠিক এমনই এক অবাক করা ঘটনা—এক শিশু মায়ের ফোন ব্যবহার করে অনলাইনে অর্ডার করে বসেছে ৭০ হাজার ললিপপ!

ঘটনাটি ঘটেছে লেক্সিংটন শহরে। হোলি লা ফেভারস নামের এক মা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাড়ির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এই ফাঁকে তাঁর দ্বিতীয় শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে লিয়াম মায়ের মোবাইলে খেলছিল। খেলার ফাঁকেই সে অ্যামাজনে ঢুকে পড়ল এবং কীভাবে যেন ১৩০ ডলার মূল্যের একেকটি করে ৩০টি ললিপপের বাক্স অর্ডার করে ফেলল। সব মিলিয়ে অর্ডারের মোট মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৪ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার—বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা!

পরদিন দরজার সামনে বিশাল সাইজের বাক্সবন্দী ললিপপ দেখে হতবাক হয়ে যান হোলি। প্রথমে বুঝতেই পারেননি কীভাবে এই পণ্য তাঁর বাড়িতে এসেছে। পরে ছেলেকে জিজ্ঞাসা করতেই বেরিয়ে আসে পুরো ঘটনা।

লা ফেভারস জানান, লিয়াম জানায় সে শুধু খেলার ছলে অর্ডার দিয়েছে। তবে সেটি যে সত্যিকারের অর্ডার হয়ে যাবে এবং ঘরে ঘরে ললিপপ ঢুকবে, তা তার কল্পনারও বাইরে।

এত ললিপপ হাতে পেয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না হোলি। তিনি যোগাযোগ করেন অ্যামাজনের সঙ্গে। কোম্পানিটি জানায়, তারা ৩০টি বাক্সের মধ্যে মাত্র ৮টি ফেরত নিতে পারবে। ফলে বাকি ২২টি বাক্স থেকে যায় হোলির ঘরে।

তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন, এই বিপুল পরিমাণ ললিপপ বিক্রি করে কিছু টাকা উদ্ধার করার চেষ্টা করবেন। প্রতিবেশী, বন্ধু ও পরিচিতজনদের কাছে ললিপপ বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। অনেকে সহানুভূতির জায়গা থেকে ললিপপ কিনতেও আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এই পুরো ঘটনাটি লা ফেভারস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। তিনি লেখেন, “ঘটনাটি মজার হলেও এর পেছনে একটি বড় আর্থিক বোঝা রয়েছে। আমরা খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম।”

পরে ব্যাংক ও সংবাদমাধ্যমের সহায়তায় অ্যামাজনের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করেন তিনি। একপর্যায়ে অ্যামাজন কোম্পানি পুরো টাকাটি ফেরত দিতে সম্মত হয়।

নিজের পোস্টে লা ফেভারস আরও লেখেন, “যাঁরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনারা চাইলে এসব ললিপপ দাতব্য সংস্থায়ও দান করা যাবে।”

এই ঘটনাটি যেমন মজার, তেমনই এটি স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারে সচেতনতার গুরুত্বও আবার মনে করিয়ে দেয়। শিশুদের হাতে মুঠোফোন তুলে দেওয়ার আগে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, অ্যাপ-লক কিংবা অর্ডার রিস্ট্রিকশন চালু রাখার প্রয়োজনীয়তা এই ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।

Leave a Comment

Footer Section