ভারতে যুদ্ধকালীন মহড়ার নির্দেশ: বাড়ছে প্রস্তুতি ও উদ্বেগ

News Desk

ভারতে যুদ্ধকালীন মহড়ার নির্দেশ: বাড়ছে প্রস্তুতি ও উদ্বেগ. Dhakainlight.com

ভারতজুড়ে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মহড়া চালাতে নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। দেশব্যাপী নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জোরদার করতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে এই প্রস্তুতি জোরদার করতে বলা হয়েছে।

পুলওয়ামা থেকে পেহেলগাম: উত্তেজনার পেছনের প্রেক্ষাপট

২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার ঠিক ১২ দিনের মধ্যে বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় ভারতের বিমানবাহিনী। সেই ঘটনার ছায়া এখনো বর্তমান। সম্প্রতি পেহেলগামে হামলার পরও ভারত কোনো প্রত্যাঘাত করেনি। তবে পুরো দেশে যেন যুদ্ধ-যুদ্ধ আবহ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই আগামীকাল বুধবার থেকে ২৪৪টি জেলার গ্রামীণ এলাকাতেও যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির মহড়া শুরু হবে।

কী ধরনের মহড়া হবে

এই মহড়ায় মূলত বিমান হামলা প্রতিরোধে প্রস্তুতি দেখা হবে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • সতর্কতামূলক সাইরেন পরীক্ষা
  • ব্ল্যাকআউট ব্যবস্থার কার্যকারিতা
  • বিমান হামলা প্রতিরোধে বাংকার প্রস্তুতি
  • গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঢেকে রাখার ব্যবস্থা (যেমন: সেতু, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেলের ডিপো)

পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে এরই মধ্যে ব্ল্যাকআউট মহড়া চালানো হয়েছে। রাতের আকাশ থেকে যাতে কোনো স্থাপনা চোখে না পড়ে, সে জন্য আলোর উৎস গোপন রাখা হয়। এতে শত্রু বিমানকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব হয় বলে মনে করা হয়।

বেসামরিক নাগরিকদের প্রস্তুত করা হচ্ছে

মহড়ার আরেকটি বড় লক্ষ্য হলো বেসামরিক মানুষদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। রাজ্যগুলোর সিভিল ডিফেন্স ইউনিট এবং এনসিসি ক্যাডেটদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়াদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। আহতদের দ্রুত উদ্ধার, হেলিকপ্টার ব্যবহারে জরুরি চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়াও এই মহড়ার অংশ।

সীমান্তে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি

জম্মু-কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে আগে থেকেই বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে।

  • বাংকার মেরামত
  • কৃষকদের দ্রুত ফসল কেটে ফেলার নির্দেশ
  • সীমান্তবর্তী সড়কগুলো দ্রুত মেরামত
  • খাদ্য ও পানীয় মজুত

এসব পদক্ষেপ যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে গ্রহণ করছে স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সোমবার রাতে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ভুল করেও যেন যুদ্ধের পথে পা না ফেলে দুই দেশ। কারণ সামরিক সমাধান নয়, শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই উত্তেজনা কমানো সম্ভব।

উপসংহার

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এই নির্দেশনায় স্পষ্ট, সামরিক উত্তেজনার আবহে দেশজুড়ে সতর্কতা ও প্রস্তুতি বাড়ানো হচ্ছে। যুদ্ধ শুরু না হলেও যুদ্ধকালীন অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি যে চলছে, তাতে সন্দেহ নেই। এখন দেখার বিষয়, কূটনৈতিক পথে উত্তেজনা কমে নাকি আরও বাড়ে।

Leave a Comment

Footer Section