সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং থাকব: মির্জা ফখরুল

News Desk

সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং থাকব: মির্জা ফখরুল. Dhakainlight.com

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় বিএনপি অতীতেও ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি, আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। কখনোই অন্যের মতের ওপর জোর করে নিজের মত চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করব না।’

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভাটি অনুষ্ঠিত হয় আবদুস সালাম মিলনায়তনে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে পারি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে আমাদের অবস্থান সবসময়ই অটুট। অতীতে গণমাধ্যমকর্মীরা যে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যে ফ্যাসিবাদী আইন প্রয়োগ হয়েছে—সেসব বিষয়ে আমরা লড়াই করেছি, এখনও করছি।’

তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মানে কেবল নিজস্ব মত প্রকাশের সুযোগ নয়, বরং ভিন্ন মতকে শ্রদ্ধার সঙ্গে মেনে নেওয়ার সংস্কৃতিও প্রতিষ্ঠা করা। আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে কারও মতকে দমন করিনি, করবও না।’

সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধেই বলা হয় তারা নাকি সংস্কার চায় না। অথচ এই সংস্কারের পথচলা শুরু হয়েছিল বিএনপির হাত ধরেই। তিনি বলেন, ‘আমরাই একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় ব্যবস্থায় গিয়েছি, সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি, রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা থেকে সরে এসেছি। আমরাই সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করেছি। অথচ আমাদের এই অবদানের কথা না বলে উল্টো প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়।’

বর্তমান সময়ে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে আতঙ্কিত থাকার কথাও জানান তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন অনেক সময় মনে হয়, আমি যা বলছি সেটা মিডিয়া কীভাবে ছাপাবে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় কীভাবে উপস্থাপন করা হবে। চরিত্র হননের প্রবণতা এখন ভয়াবহ, যা রাজনীতি করা মানুষদের জন্য চিন্তার বিষয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপিই প্রথম সংবাদপত্রের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করেছিল। তার আগে ছিল একদলীয় বাকশাল শাসন ব্যবস্থা, যেখানে সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আজকের যে টেলিভিশন মিডিয়ার বিস্তার, সেটা আমাদের সময়েই শুরু হয়। আমাদের সময় সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন তুলনামূলকভাবে অনেক কম ছিল।’

গণতন্ত্রের বিকাশে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘যদি মনে করি আমি যা বলি সেটাই ঠিক, তাহলে তা গণতন্ত্রের চর্চাকে ব্যাহত করবে। সংবাদমাধ্যমে নিজের মত প্রচার হলে ভালো, আর না হলে খারাপ—এই চিন্তা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।

আলোচনায় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

সম্পাদকদের মধ্যে বক্তব্য দেন দ্য নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী এবং দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন।

Leave a Comment

Footer Section