খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ক্যাম্পাসে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের চারপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। কিছু শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ছাড়তে দেখা গেছে, যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবারের সংঘর্ষে রামদা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বিষয়টি নজরে আনার পর মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের ফলে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা নেতাদের কোনো অপরাধের দায়দায়িত্ব দল নেবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যুবদলের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, গতকাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে, যাতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী আজ সকালে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তারা প্রশাসনের কাছে শাস্তির দাবি এবং উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগেরও দাবি করেন। দাবিগুলি মেনে নেওয়ার জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আজ দুপুরের মধ্যে সময়সীমা বেঁধে দেন এবং দাবির প্রতি সহানুভূতির অভাব হলে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার হুমকি দেন।
কুয়েটের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকলে, আজ দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে একটি জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। এই সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে এবং তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখবেন। এই অবস্থায়, কুয়েটের শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত, কারণ ক্যাম্পাসের অস্থির পরিস্থিতি তাদের পড়াশোনায় বাধা সৃষ্টি করছে।
এতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের আশায় আছেন। তাদের দাবি পূরণ না হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে।