৭ গোলের জয়ের পর বাংলাদেশ নারী দলের স্বপ্ন এখন এশিয়ান কাপ মূল পর্বে

News Desk

৭ গোলের জয়ের পর বাংলাদেশ নারী দলের স্বপ্ন এখন এশিয়ান কাপ মূল পর্বে. Dhakainlight.com

দুই দশকের অপেক্ষার অবসান হলো অবশেষে। এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে প্রথমবারের মতো জয় পেল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। তাও আবার কী দাপুটে জয়! বাহরাইনকে ৭–০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বাছাইপর্ব শুরু করেছে পিটার বাটলারের দল।

এই জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ কাটিয়েছে দুটি বড় শূন্যতা। প্রথমত, এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে এটি তাদের প্রথম জয়। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘদিন ধরে গোলশূন্য থাকা দল এবার এক ম্যাচেই প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়েছে সাতবার। শামসুন্নাহার জুনিয়রের গোলে শুরু, তারপর তহুরা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, কোহাতি কিসকু, মুনকি আক্তাররা গোল করে স্কোরলাইন গড়েছেন রীতিমতো গোলবন্যায়।

এমন পারফরম্যান্সে এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে—বাংলাদেশ কি পারবে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিতে? এশিয়ান কাপ খেলতে হলে বাংলাদেশের সামনে এখনো দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দলই পাবে মূল পর্বের টিকিট, আর রানার্সআপদের জন্য দ্বিতীয় কোনো সুযোগ নেই।

‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে স্বাগতিক মিয়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান। এই গ্রুপের সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের মতোই ৩ পয়েন্ট পেয়েছে মিয়ানমার, যারা তুর্কমেনিস্তানকে হারিয়েছে ৮–০ ব্যবধানে। তবে গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকার কারণে শীর্ষে রয়েছে স্বাগতিক দলটি।

২ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার ম্যাচ। এই ম্যাচে জয় পেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে যাবে চূড়ান্ত পর্বের দিকে। তবে ড্র করলেও শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব হবে। মিয়ানমার শক্ত প্রতিপক্ষ, তাদের ফিফা র‍্যাঙ্কিং ৫৫তম, যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৮ নম্বরে।

বাংলাদেশের তৃতীয় ম্যাচ ৫ জুলাই, প্রতিপক্ষ তুর্কমেনিস্তান, যারা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৪১তম। এই ম্যাচে বাংলাদেশ ফেভারিট হলেও চূড়ান্ত ফলাফল নির্ভর করবে ২ জুলাইয়ের মিয়ানমার ম্যাচের ওপর।

এই বাছাইপর্ব কেবল ২০২৬ সালের এশিয়ান কাপের টিকিট নয়, আরও বড় স্বপ্নের সিঁড়িও বটে। কারণ, এশিয়ান কাপ থেকেই সুযোগ মিলতে পারে ২০২৭ নারী বিশ্বকাপ ও ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে খেলার। তবে তার জন্য বাংলাদেশের নারী দলকে কমপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে হবে, এমনকি সেমিফাইনালে পৌঁছাতেও হতে পারে।

পিটার বাটলারের অধীনে আফঈদা-তহুরা-ঋতুপর্ণাদের এখন মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাছাইয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা। ৭ গোলের জয় শুধু ইতিহাসই তৈরি করেনি, নতুন এক আশার আলো জ্বালিয়েছে বাংলাদেশের নারী ফুটবলে।

এখন পুরো দেশের চোখ ২ জুলাইয়ের দিকেই। ওই দিন মিয়ানমারের বিপক্ষে মাঠে নামবে লাল-সবুজের মেয়েরা। সেদিনের ফলাফলে ঠিক হবে—বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল কি পারবে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ইতিহাস গড়তে? নাকি আবারও বাছাইপর্বেই থেমে যেতে হবে তাদের স্বপ্নযাত্রা?

সময় বলবে সব, তবে এখনই বলা যায়—বাংলাদেশ নারী দল শুধু জেতেনি, তারা দেখিয়ে দিয়েছে নিজেদের সম্ভাবনার দিগন্ত কতটা বিস্তৃত।

Footer Section