৩২ মণের ‘লায়ন’: শেরপুরের কোরবানির হাটের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ

News Desk

শেরপুর জেলার সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হোসাইন তাঁর আদরের গরুটির নাম রেখেছেন ‘লায়ন’। দেশি জাতের গরুর সঙ্গে শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের ক্রসে জন্ম নেওয়া এই গরুটির ওজন এখন ৩২ মণ, উচ্চতা ৬৬ ইঞ্চি এবং দাঁত হয়েছে ছয়টি। এবারের কোরবানির ঈদে এটি হতে চলেছে শেরপুরের সবচেয়ে বড় ও দামি গরু—যার দাম হাঁকানো হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা।

লায়নের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা পুরোপুরি নাজমুল হোসাইনের বাড়িতেই। পেশায় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি নাজমুল প্রতিদিন স্থানীয় কুসুমহাটি বাজারে কাজ করেন। আর বাড়িতে লায়নের দেখভাল করেন তাঁর মা, বাবা এবং ভাগনে মাহবুবুর আবিদ। এই তিনজনের ভালোবাসা আর যত্নে বড় হয়েছে লায়ন। মাহবুবুর বলেন, ‘লায়ন আমার ভাইয়ের মতো। সে আমার হাতেই বড় হয়েছে। ওকে ছাড়া থাকার কথা ভাবতেই পারি না।’

লায়নের খাবার তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ। প্রতিদিন তাকে দেওয়া হয় ২ কেজি খড়, ১ কেজি খইল, ৫ কেজি ভুসি, ৪ হালি কলা এবং ১ কেজি খুদের ভাত। এসব খাবারের পেছনে প্রতিদিন খরচ হয় প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নাজমুল জানান, গত কোরবানির ঈদেও তিনি লায়ন বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছিলেন, কিন্তু আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। অনেকে গরুটিকে জবাই করে খাওয়ার প্রস্তাব দিলেও তিনি তা মেনে নিতে পারেননি। তাঁর বরাবরের ইচ্ছা ছিল একদিন জেলার সবচেয়ে বড় গরু কোরবানির হাটে তুলবেন—এবার যেন সেই স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।

শেরপুর সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পলাশ কান্তি দত্ত জানিয়েছেন, এবারের কোরবানির ঈদের জন্য উপজেলায় প্রায় ৯ হাজার পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় গরু সম্ভবত নাজমুল হোসাইনের লায়নই। তাঁর মতে, এটি জেলার কোরবানির হাটের সবচেয়ে চমকপ্রদ পশু হতে যাচ্ছে।

চার বছর ধরে একটানা যত্ন, ভালোবাসা ও পরিশ্রমে বেড়ে ওঠা এই গরুটি শুধু একটি পশু নয়—এটি নাজমুলের পরিবারের অংশ হয়ে উঠেছে। এখন সবার চোখ এই লায়নের দিকেই, দেখতে যে কে বা কারা শেষ পর্যন্ত লায়নের মালিক হয়।

Footer Section