সামিট পাওয়ারের মুনাফা কমেছে চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ)। কোম্পানিটির প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময় তাদের সমন্বিত মুনাফা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪২ কোটি টাকায়, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মুনাফা কমেছে প্রায় ৩২ কোটি টাকা বা ৪৩ শতাংশ। এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (EPS) দাঁড়ায় ৩৯ পয়সা, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ৬৯ পয়সা।
সামিট পাওয়ার একইসঙ্গে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের (জুলাই–মার্চ) আর্থিক ফলাফলও প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, নয় মাসে তাদের মুনাফা হয়েছে ১৪৬ কোটি টাকা, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ২৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ মুনাফা কমেছে ১০০ কোটি টাকা, যা শতাংশের হিসাবে প্রায় ৩৯ শতাংশ। এই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৪৬ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ২ টাকা ৪০ পয়সা।
মুনাফা কমার কারণ হিসেবে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষে চুক্তি নবায়ন হয়নি এবং আরেকটি কেন্দ্র আংশিক উৎপাদনে ছিল। জাতীয় লোড ডিসপ্যাচ সেন্টার (NLDC) জানায়, বিদ্যুৎ চাহিদা কম থাকায় কিছু কেন্দ্র পূর্ণাঙ্গভাবে উৎপাদনে যেতে পারেনি। এর পাশাপাশি আরও তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নবায়িত চুক্তিতে নতুন শর্ত হিসেবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না করলে বিল পাওয়া যাবে না—এ রকম ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ফলে এই কেন্দ্রগুলো থেকে আয় হয়নি।
এ ছাড়া চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া কেন্দ্রগুলোর কর বাড়ানো হয়েছে, যা কোম্পানির ব্যয় বৃদ্ধি করেছে এবং আয় কমিয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে এই আর্থিক চাপে সামিট পাওয়ারের লাভ কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
তবে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (Cash Flow Per Share) বাড়েছে কিছুটা। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে তা ছিল ৭ টাকা ২৩ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৭ টাকা ৫ পয়সা। আর ৩১ মার্চ ২০২৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (NAVPS) ছিল ৪২ টাকা ৫৫ পয়সা।
লভ্যাংশ প্রদানের ধারাবাহিকতায় সামিট পাওয়ার ২০২৪ অর্থবছরের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগেও ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ, ২০২২ সালে ২০ শতাংশ এবং ২০২১ ও ২০২০ সালে যথাক্রমে ৩৫ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।
এই মুনাফা কমার প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে, বিশেষ করে যখন বিদ্যুৎ খাতের ভবিষ্যৎ ও চুক্তি ব্যবস্থাপনা বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।