হাইকোর্টের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, চূড়ান্ত আদেশ না আসায় হতাশা

News Desk

হাইকোর্টের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, চূড়ান্ত আদেশ না আসায় হতাশা. Dhakainlight.com

হাইকোর্টের মাজার গেটের সামনে আজ রোববার দুপুরে বিক্ষোভ করেছে ঢাকার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচির মূল কেন্দ্র ছিল ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ও চলমান শিক্ষক সংকট।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম জানান, “ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে পদোন্নতির বিষয়ে হাইকোর্টের যে রায় ছিল, তা বাতিলের আশায় আজকের শুনানির দিকে চেয়ে ছিলাম। কিন্তু রায়টি এখনো স্থগিত থাকলেও কোনো চূড়ান্ত আদেশ আসেনি। পরবর্তীতে আবার শুনানির তারিখ নির্ধারণ হবে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল আমাদের জানিয়েছেন। এতে আমরা হতাশ।”

শিক্ষার্থীদের মতে, শিক্ষার মান উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পর্যাপ্ত ও যোগ্য শিক্ষক। অথচ দেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে ভয়াবহ শিক্ষক সংকট চলছে। মাশফিক বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠানে এখন অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চালানো হচ্ছে। স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না দিলে কারিগরি শিক্ষার মান আরও নিচে নেমে যাবে। তাই দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে হবে।”

ছয় দফা দাবিতে বিগত কিছুদিন ধরে চলমান এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাজপথে সক্রিয়ভাবে অবস্থান নিয়েছেন। তারা সড়ক, রেলপথ অবরোধ, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  1. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০% কোটা বাতিল
  2. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে পদোন্নতির রায় বাতিল
  3. ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন
  4. মামলায় জড়িত সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা
  5. ২০২১ সালে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেই নিয়োগ বাতিল
  6. বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন

এছাড়াও শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও বারবার উপেক্ষিত হওয়ায় তারা আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে ঝুঁকতে পারেন।

এর আগে শনিবারও শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছিল, আদেশ প্রত্যাশিত না হলে পরদিন আবারও হাইকোর্টের সামনে কর্মসূচি হবে। সেই ঘোষণা মতোই আজ তারা জড়ো হন মাজার গেটের সামনে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা এখনও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চান। কিন্তু সমাধানের কোনো আশ্বাস না পেলে আগামী দিনে আন্দোলনের গতি আরও বাড়ানো হবে।

পলিটেকনিক শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যেই এই আন্দোলন চলমান রয়েছে। প্রশাসন কীভাবে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়, সেটাই এখন সবার নজর।

Leave a Comment

Footer Section