পবিত্র হজ উপলক্ষে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখো মুসলমান বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। হজের সময় নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের জন্য বেশ কিছু দিকনির্দেশনা জারি করেছে।
গতকাল রোববার মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, হজের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতাগুলোর সময় এসব পরামর্শ মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে হজযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে এবং যাত্রাপথে চলাচলে কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না।
সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তাঁবু বা নির্ধারিত আবাসন হোটেল ছাড়া অন্য কোথাও, বিশেষত জনসমাগমপূর্ণ পথ ও প্রাঙ্গণে, বিশ্রামের জন্য না শোওয়ার। কারণ, ভিড়পূর্ণ স্থানে বিশ্রামের জন্য শুয়ে পড়লে চলাচলের পথে জট সৃষ্টি হয়। এতে জরুরি প্রয়োজনে উদ্ধার বা সেবাদানকারী দলগুলোর তাৎক্ষণিক সাড়া দিতে অসুবিধা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নির্ধারিত স্থান ও সময়ের প্রতি সম্মান দেখালে হজের ব্যস্ততম সময়েও চলাচলের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে এবং ঝুঁকিও কমে যাবে।
এ বছর হজ অনুষ্ঠিত হবে ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ, যা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ২০২৫ সালের ৫ জুন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লিরা সৌদি আরবে এসে পৌঁছেছেন। এ বছর হজযাত্রীর সংখ্যা ২৫ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
চলতি বছর হজের সময় প্রচণ্ড গরম পড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হজযাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে সৌদি আরব বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।
হজযাত্রীদের সহায়তায় ছয়টি ভাষায় একটি ইলেকট্রনিক হজ গাইড চালু করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। গাইডটি আরবি, ইংরেজি, উর্দু, ফরাসি, মালয়ালম ও তুর্কি ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে। মসজিদে স্থাপিত ইলেকট্রনিক লাইব্রেরি থেকে গাইডে প্রবেশ করা যাবে, এমনকি সৌদিয়া এয়ারলাইনের ফ্লাইটেও এটি ব্যবহার করা যাবে।
এই ইলেকট্রনিক গাইডের মাধ্যমে হজের নিয়মকানুন, আচার-অনুষ্ঠান এবং করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে হজযাত্রীরা সহজেই অবগত হতে পারবেন। সৌদি সরকারের লক্ষ্য, হজযাত্রীদের সচেতন করে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান যথাযথভাবে সম্পাদনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।
সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবারের হজ উপলক্ষে দেশজুড়ে নিরাপত্তা, পরিবহন, স্বাস্থ্য ও আবাসন ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
পবিত্র হজের সময় শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং সকল হজযাত্রীর মসজিদুল হারাম ও আরাফাতের ময়দানে নির্বিঘ্নে ইবাদতের সুযোগ নিশ্চিত করাই সৌদি সরকারের প্রধান লক্ষ্য।