সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পানি বাড়ছে, বন্যার আশঙ্কা কম

News Desk

সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পানি বাড়ছে, বন্যার আশঙ্কা কম. Dhakainlight.com

সুনামগঞ্জে টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার নদ-নদী ও হাওরের পানি ক্রমাগত বাড়ছে। যদিও এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। একই সময়ে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে হয়েছে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, যা সেখান থেকে ঢল আকারে সুনামগঞ্জে নামতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে জেলার নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে।

শনিবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর এলাকায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ৬.৭৮ মিটার, যা এখনো বিপৎসীমার ১.২ মিটার নিচে রয়েছে। গতকাল একই সময়ে এই উচ্চতা ছিল ৫.৮৮ মিটার—মানে গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি বেড়েছে ৯০ সেন্টিমিটার।

তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তঘেঁষা যাদুকাটা নদীতেও পানি বাড়ছে। সেখান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে স্থানীয় হাওরগুলো দ্রুত ভরে উঠছে। লাউরেগড় গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান জানান, সকাল থেকে ঢলের প্রবাহ বেড়েছে এবং কিছু জায়গায় নিচু জমিতে পানি জমতে শুরু করেছে।

জেলার অন্যান্য নদী যেমন পাটনাই, কুশিয়ারা, নলজুর, চেলা, চলতি, রক্তি, বৌলাই, খাসিয়ামারাও পানিবৃদ্ধির পর্যায়ে রয়েছে। বর্ষাকালে এসব নদীতে পানি বাড়লে হাওর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।

তবে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড আশ্বস্ত করেছে, আপাতত ভয়াবহ বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, “বর্তমান পানি পরিস্থিতি সুনামগঞ্জের জন্য মৌসুমী ও স্বাভাবিক। আমরা সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছি, তবে এখনো এমন কিছু দেখা যাচ্ছে না যাতে তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে।”

জেলার বাসিন্দাদের প্রতি পরামর্শ, নিচু এলাকার মানুষজন যেন সতর্ক থাকেন এবং প্রয়োজন হলে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত সরে যান। তবে স্বস্তির বিষয়, সুরমা নদী এখনো বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে। পরিস্থিতি আরও ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

সুনামগঞ্জের মতো বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চলে এই ধরনের ঢলপ্রবাহ সাধারণত ঘটে থাকে। কিন্তু ভারতের চেরাপুঞ্জির মতো উজানের এলাকায় অতিমাত্রায় বৃষ্টি হলে তা দ্রুত ভাটিতে নেমে আসে এবং অল্প সময়ের মধ্যে হাওরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা বা স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা তৈরি করে।

জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে যাতে প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তবে আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং ভয়ের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Footer Section