সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডিকে ছুটিতে পাঠাল পরিচালনা পর্ষদ

News Desk

সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডিকে ছুটিতে পাঠাল পরিচালনা পর্ষদ. Dhakainlight.com

সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নুরুদ্দিন মো. ছাদেক হোসেনকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে গতকাল রোববার (৪ মে) থেকে, যা চলবে আগামী ৪ আগস্ট পর্যন্ত।

ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ অভ্যন্তরীণ তদন্তে কিছু অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পরই এমডিকে সাময়িক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই সময়ের মধ্যে ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব পালন করবেন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) আবিদুর রহিম চৌধুরী।

এর আগে দেশের সাতটি ব্যাংকের এমডিকে একইভাবে ছুটিতে পাঠানো হয়। কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে, আবার কোনো ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নিজেরাই এই সিদ্ধান্ত নেয়। মূলত বিভিন্ন অনিয়মের নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

সাউথইস্ট ব্যাংকে গত কয়েক বছর ধরে কেনাকাটা, সংস্কার ও প্রচারের নামে বড় অঙ্কের অর্থ তছরুপ, তহবিল ব্যবহারে অনিয়ম এবং বিতর্কিত নিয়োগসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের ঘটনা সামনে আসে সরকার পতনের পর ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে।

এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তিন শীর্ষ কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। তাঁরা হলেন—সাতটি বিভাগের দায়িত্বে থাকা ওয়ারেস উল মতিন, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ তানভীর রহমান এবং কোম্পানি সচিব এ কে এম নাজমুল হায়দার।

অভিযোগ রয়েছে, এসব কর্মকর্তারা তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের ছত্রছায়ায় একটি দুর্নীতির চক্র গড়ে তোলেন। তখন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আলমগীর কবির, যিনি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানার পরও পদে বহাল ছিলেন। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান পদ ছাড়লেও পরিচালক হিসেবে এখনও ব্যাংকে যুক্ত আছেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেপ্টেম্বরে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বড় পরিবর্তন আসে। ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম এ কাশেম দীর্ঘ ২০ বছর পর পুনরায় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন।

এছাড়া ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে—ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। তাঁরা হলেন—সাবের হোসেন চৌধুরী, মোরশেদ আলম ও মামুনুর রশিদ কিরণ। এর বাইরে বেঙ্গল ব্যাংকের পরিচালক আবু নোমান হাওলাদারের খেলাপি ঋণের তথ্যও গোপন রাখা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিদর্শনে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। ঋণখেলাপির তথ্য ‘নিয়মিত’ দেখাতে গিয়ে ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, যাঁদের চিহ্নিত করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এই ঘটনাগুলো দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের প্রশ্ন আবারও সামনে এনে দিয়েছে। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে আরও শাস্তিমূলক পদক্ষেপের সম্ভাবনা রয়েছে

Leave a Comment

Footer Section