আগামী অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র (পিএসআর) জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হতে পারে। বর্তমানে, পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ দিতে হতো, যা সীমিত ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য একটি বড় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এবার সরকার এই বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, যা অনেক সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে পারে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তৃতায় এই ঘোষণা দিতে পারেন, যার ফলে এখন থেকে শুধুমাত্র কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সনদ দেখালেই হবে। এতে করে সাধারণ মানুষের জন্য সঞ্চয়পত্র কেনার প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাবে এবং অতিরিক্ত জটিলতা কমে আসবে।
বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর চার ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে: পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্র। তবে পরিবার সঞ্চয়পত্রের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, কারণ এটি শুধুমাত্র নারীরা কিনতে পারেন। অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ যারা করযোগ্য আয় থেকে বঞ্চিত, তারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে মুনাফার টাকা উপার্জন করেন, তবে এই মানুষদেরও বাধ্য হয়ে রিটার্ন জমা দিতে হয়।
এছাড়াও, বর্তমানে দেশে প্রায় ৪৫টি সরকারি-বেসরকারি সেবা গ্রহণের জন্য রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র বা পিএসআর দেখাতে হয়, যা অনেক করদাতাকে বাড়তি চাপের মধ্যে ফেলেছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এবছর ১৬ লাখ করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছেন, এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ শূন্য রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
এভাবে সঞ্চয়পত্র কেনায় পিএসআর দেখানোর বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হলে করদাতাদের জন্য এটি একটি বড় সুবিধা হয়ে উঠবে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য।