সচিবালয়ে আজ রোববার সকাল থেকে দৃশ্য ছিল অন্যরকম। দপ্তরের কাজ ফেলে শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিচে নেমে আসেন। তাঁরা সবাই অংশ নেন বিক্ষোভ মিছিলে। তাদের কণ্ঠে ছিল প্রতিবাদের স্লোগান—‘অবৈধ কালো আইন মানি না’, ‘চাকরি হরণ চলবে না’।
এই বিক্ষোভের মূল কারণ ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর থেকেই অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে। আজ দ্বিতীয় দিনের মতো বড় আকারে বিক্ষোভ হলো সচিবালয়ের ভেতরে।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। সংগঠনটি এই খসড়া অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যা দিয়ে দ্রুত তা প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কর্মচারীরা বলেন, নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে চার দশকেরও বেশি সময় আগের কিছু কঠোর বিধানকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এতে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনায়াসেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুযোগ রাখা হয়েছে। তারা মনে করেন, এই ধারা সংবিধান পরিপন্থী এবং সরকারি চাকরির নিরাপত্তা ও মর্যাদার পরিপন্থী।
মিছিল সচিবালয়ের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে কর্মচারীদের একত্রিত করে, যাতে ক্রমশ বাড়ে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা। মিছিলের স্লোগানে স্লোগানে মুখর ছিল সচিবালয়ের প্রতিটি প্রাঙ্গণ। কর্মচারীদের দাবি, এই খসড়া আইন পাশ হলে তা সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।
সংযুক্ত পরিষদের নেতারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে স্বস্তি, ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা ছাড়া সরকারি প্রশাসন চলতে পারে না। তাই তাঁরা অনতিবিলম্বে অধ্যাদেশটি প্রত্যাহার করে আলোচনার ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য সমাধানের আহ্বান জানান।
সরকারপক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে সচিবালয়ের ভেতরে কর্মচারীদের এই বিক্ষোভ স্পষ্ট করছে—সংশোধিত চাকরি আইনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত উদ্যোগ না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের ইঙ্গিতও মিলছে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যে।