সচিবালয়ে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের প্রতিবাদ অব্যাহত

News Desk

সচিবালয়ে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের প্রতিবাদ অব্যাহত. Dhakainlight.com

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর প্রতিবাদে আজ সোমবার টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সকাল ১১টার দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা মিছিল নিয়ে এসে বাদামতলায় জড়ো হন। তাঁদের দাবির মূল কেন্দ্রবিন্দু—অধিকতর শৃঙ্খলা নিশ্চিতের নামে নিয়ন্ত্রক ও দমনমূলক ধারা যুক্ত করে প্রণীত এ অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর জানান, নতুন অধ্যাদেশটিকে তাঁরা ‘কালাকানুন’ হিসেবে দেখছেন এবং তা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

এখন পর্যন্ত আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মচারীরা দাবি করছেন, এই অধ্যাদেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকার এবং প্রশাসনিক ন্যায্যতা পরিপন্থী। তাঁরা বলছেন, অপরাধ প্রমাণের সুযোগ না দিয়েই চাকরিচ্যুতির বিধান যুক্ত করা হয়েছে, যা একতরফা এবং অসাংবিধানিক।

নতুন অধ্যাদেশে চারটি অপরাধের ব্যাখ্যা ও তার জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে—যেমন কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতি, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অনানুগত্যে উসকানি ও দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান। এর শাস্তি হতে পারে নিম্নপদে অবনমন, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা বরখাস্ত।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে, এবং অপরাধ প্রমাণ হলে আরও সাত দিনের মধ্যে শাস্তির আদেশ দেওয়া যাবে। দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ থাকবে না—এমন বিধান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের পর তা দ্রুত কার্যকর করে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। ফলে ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে কর্মীদের উপস্থিতি ও স্লোগানে সরকারি দপ্তরগুলোতে স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

বিক্ষোভকারী কর্মচারীরা জানিয়েছেন, দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে এবং সচিবালয়ের সব গেটে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি কার্যকর করা হবে।

Leave a Comment

Footer Section