লুটপাট হওয়া সম্পদের ব্যবস্থাপনায় তৈরি হচ্ছে তহবিল, আমানতকারীরা পাবেন ফেরত টাকা

News Desk

লুটপাট হওয়া সম্পদের ব্যবস্থাপনায় তৈরি হচ্ছে তহবিল, আমানতকারীরা পাবেন ফেরত টাকা. Dhakainlight.com

লুটপাট ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ ও অর্থের ব্যবস্থাপনায় একটি আলাদা তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে অর্থ দেওয়া হবে, যা দিয়ে তারা আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারবে। এ ছাড়া ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে অবৈধভাবে লুট হওয়া অর্থ দরিদ্র জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।

আজ ১৯ মে সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সরকার ইতিমধ্যে জব্দকৃত অর্থ ও সম্পদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং দ্রুত তহবিলের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আইনে পরিবর্তন আনা হবে।

এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অর্থপাচার প্রতিরোধ ও ফেরত আনার বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম।

বৈঠকে জানানো হয়, দেশের বৃহৎ ১০টি ব্যবসায়ী গ্রুপ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে আন্তঃসংস্থা টাস্কফোর্সের অধীনে গঠিত ১১টি দল। তদন্তাধীন শিল্পগোষ্ঠীগুলো হলো—এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ এবং আরামিট গ্রুপ।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘যাঁরা অর্থ পাচার করেছেন, তাঁরা শান্তিতে নেই। তাঁরা নামী দামি আইনজীবী নিয়োগ দিচ্ছেন, কেউ কেউ বছরে তিন কোটি ডলার পর্যন্ত ব্যয় করছেন। এটা শান্তিতে থাকার লক্ষণ নয়। তবে অর্থ ফেরত আনতে সময় লাগবে, কারণ আমরা আইনগত প্রক্রিয়া মেনে এগোচ্ছি।’

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, মধ্যম পরিসরের আরও ১২৫টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যাদের প্রত্যেকে ২০০ কোটির বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই কার্যক্রমে ২০টি আন্তর্জাতিক আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্বে কাজ চলছে।

গভর্নর আরও জানান, ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে এস আলম গ্রুপের ১২ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার শেয়ার জব্দ করা হয়েছে। এই শেয়ার একটি কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে হস্তান্তর করে যে অর্থ আসবে, তা দিয়ে ব্যাংক তার আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারবে।

বর্তমানে অনুসন্ধানের আওতায় থাকা ব্যক্তিদের ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, বিদেশে ১৬ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার এবং দেশে ৪২ হাজার ৬১৪ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।

গভর্নরের ভাষ্যমতে, এই সরকারই প্রথমবারের মতো এমন তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন করাই তাদের লক্ষ্য।

Leave a Comment

Footer Section