লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে সোমবার রাতে প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দক্ষিণ ত্রিপোলিভিত্তিক প্রভাবশালী গোষ্ঠী ‘সাপোর্ট অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি অ্যাপারেটাস’-এর নেতা আবদেলগনি আল-কিকলি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
বার্তা সংস্থা এএফপির ত্রিপোলিভিত্তিক সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, রাত ৯টা থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভারী অস্ত্রের গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয় জাতীয় ঐক্যের সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার রাতের সংঘর্ষের জেরে মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজধানী ত্রিপোলি ও আশপাশের জেলাগুলোর সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সংঘর্ষটি মূলত ত্রিপোলিভিত্তিক একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং বন্দরনগরী মিসরাতাভিত্তিক আরেক গোষ্ঠীর মধ্যে ঘটে। এই সহিংসতা রাজধানীর দক্ষিণে অবস্থিত উপশহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। মিসরাতা শহরটি ত্রিপোলি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এবং দীর্ঘদিন ধরেই অঞ্চলটিতে প্রভাব বিস্তারের লড়াই চলছে।
বর্তমানে লিবিয়া দুই প্রশাসনের মধ্যে বিভক্ত। একটি জাতিসংঘ স্বীকৃত সরকার যাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে রাজধানী ত্রিপোলি। অন্যটি হলো পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসন, যা পরিচালিত হচ্ছে হাফতার পরিবারের নেতৃত্বে। দুই পক্ষের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতা লিবিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখেছে।
জাতিসংঘের সহায়তায় পরিচালিত লিবিয়া সহায়তা মিশন (UNSMIL) সকল পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। সংঘর্ষের ফলে জনজীবনে যে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তার সমাধানে সংলাপ ও সহনশীলতা প্রয়োজন বলে সংস্থাটি মন্তব্য করেছে।
ত্রিপোলিতে এমন সময় এই সহিংসতা ঘটল যখন দেশটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির দিকে এগোচ্ছে। পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠলে নির্বাচন প্রক্রিয়া আবারও অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।