সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) ২০২৪ সালে ১০১ কোটি টাকা লোকসান করায় শেয়ারধারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। বৃহস্পতিবার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি ব্যাংক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দীর্ঘদিন চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকটি আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর তা থেকে মুক্ত হয়। ২০১৭ সালে গ্রুপটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসার পর চেয়ারম্যান করা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল আজিমকে। পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যান হন এস আলমের জামাতা বেলাল আহমেদ। এস আলম গ্রুপের সময়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে ১৩ হাজার ২৬৭ কোটি টাকার মতো ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ে, যা ব্যাংকের মোট ঋণের প্রায় ৩৪ শতাংশ।
এসআইবিএলের ২০২৪ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৮৯ পয়সা, যেখানে ২০২৩ সালে ছিল ১ টাকা ৮৬ পয়সা আয়ের হিসাব। একই সময়ের মধ্যে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে মাইনাস ৭ টাকা ৫১ পয়সা, আগের বছর ছিল ৭ টাকা ৯০ পয়সা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ছিল ১৮ টাকা ১৫ পয়সা।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ব্যাংকটি ২১২ কোটি টাকার মুনাফা করেছিল। এক বছরের ব্যবধানে এমন লোকসানে পতনের পেছনে ঋণখেলাপি, অপারেটিং ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি এবং আয় কমে যাওয়া মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ১৮ আগস্ট বেলা ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ জুন।
এই সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে এ ধরনের পরিস্থিতি ভবিষ্যতেও দেখা দিতে পারে।
