চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী বুধবার, যেখানে অংশ নিচ্ছেন রেকর্ডসংখ্যক ২২ হাজার ৫৮৬ জন গ্র্যাজুয়েট। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এত বিপুলসংখ্যক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এর আগে বিশ্বের কোনো সমাবর্তন হয়নি।
আজ সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, দুই সহ–উপাচার্য এবং সমাবর্তন কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সমাবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রি প্রদান করা হবে। তিনি মূল বক্তা হিসেবে গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।
এই বিশাল সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী, শিক্ষক ও অতিথিসহ প্রায় ২৫ হাজার মানুষের জন্য বিশেষ প্যান্ডেল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ আয়োজনে ৪২ জনকে পিএইচডি এবং ৩৩ জনকে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
সমাবর্তনের জন্য বরাদ্দ বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত সাড়ে ছয় কোটি টাকার মধ্যে দুই কোটি টাকা জমা পড়বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে। ফলে প্রায় ১০ কোটি টাকার ঘাটতি বহন করছে বিশ্ববিদ্যালয়। সবচেয়ে বেশি ব্যয় হচ্ছে প্যান্ডেল, সাজসজ্জা ও বসার ব্যবস্থায়।
উপাচার্য বলেন, “শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনের অধিকার থেকে তারা প্রায় সাড়ে ১৪ বছর বঞ্চিত ছিলেন। তাদের সেই অধিকার ফিরিয়ে দিতেই আমরা এই আয়োজন করেছি।” তিনি আরও বলেন, “অধ্যাপক ইউনূসের ডিগ্রির অভাব নেই, কিন্তু তাঁকে সম্মানিত করতে পারলে আমরা গর্বিত হব, বিশ্ববাসীও আমাদের সম্মান দেবে।”
সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি আরও চারজন উপদেষ্টা উপস্থিত থাকবেন: শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটি একটি যুগান্তকারী আয়োজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা উচ্চশিক্ষার গৌরব ও উদযাপনের এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে স্থান পাবে।