রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) আবদুল ওয়াহেদ খান (টিটু) নওগাঁ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। শুক্রবার ভোরে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার চাকরাইল চৌধুরীপাড়া গ্রামে বিএনপি নেতা সাগর চৌধুরীর বাড়ি থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের সময় সাগর চৌধুরীকেও আটক করা হয়। তিনি নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি এবং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি সাবেক ডেপুটি স্পিকার আক্তার হামিদ সিদ্দিকীর ছেলে আরেফিন সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী।
আবদুল ওয়াহেদ খান রাজশাহী নগরের রানীবাজার চিনিপট্টি এলাকার বাসিন্দা। তিনি রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি রুয়েটের সেকশন অফিসার পদে থাকলেও দীর্ঘ পাঁচ বছর ছুটি ছাড়াই সাবেক মেয়রের পিএ হিসেবে কাজ করেছেন। একই সময়ে তিনি রুয়েট ও সিটি করপোরেশন—দুই জায়গা থেকেই বেতন নিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে সম্পদ অর্জন, কিশোর গ্যাং লালন ও জমি দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
২০১৪ সালের পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য প্রকাশিত হয় এবং মেয়র লিটনের মেয়াদকালে তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ওয়াহেদকে পিএ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
বদলগাছী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, আত্মীয়তার সূত্রে সাগর চৌধুরীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন ওয়াহেদ খান। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সাগর চৌধুরীর বিরুদ্ধেও আশ্রয়দানের অভিযোগে আলাদা মামলা হচ্ছে।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ জানান, গত ৫ আগস্ট রাজশাহীতে সংঘটিত ঘটনায় ওয়াহেদের নামে দুটি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে একটি হত্যা মামলা।
এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওয়াহেদ খানের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত থাকবে এবং অন্যান্য অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।