জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগ করাকে যথার্থ পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও যেভাবে এই বিভাজন করা হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, “এনবিআর ভাগ করার সুপারিশ আমাদের শ্বেতপত্রেও ছিল। তবে যে প্রক্রিয়ায় এটি করা হয়েছে, তাতে আলোচনা হয়নি, পেশাজীবীদের মতামত নেওয়া হয়নি এবং স্বায়ত্তশাসনের জায়গা সংকুচিত করা হয়েছে। এইভাবে বিভাজন করাটা সঠিক হয়নি।”
আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘নীতি সংস্কার ও আগামীর জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সংলাপে তিনি আরও বলেন, “এখন এনবিআরকে কার্যকরভাবে ভাগ করাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কারের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেবপ্রিয় বলেন, “সরকার অন্যান্য খাতে সংস্কারে যত মনোযোগ দেয়, অর্থনৈতিক সংস্কারে ততটা দেয় না। অথচ অর্থনীতি যদি স্থিতিশীল না হয়, তাহলে অন্য সংস্কারগুলোও টেকসই হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “গত সরকারের সময় যারা লুটপাটে যুক্ত ছিলেন, সেই চক্রের রাজনীতিবিদেরা আজ পালিয়ে গেছেন, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ম্রিয়মাণ, অথচ আমলারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।”
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, সব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাজেট বাস্তবায়ন নির্ভর করবে চারটি বিষয়ের ওপর: রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়ার অগ্রগতি, নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট রূপরেখা, বিচার কার্যক্রমের সময় নির্ধারণ এবং সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলার অবস্থা।
তিনি বলেন, “বর্তমানে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। কর্মসংস্থান বাড়ছে না, মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম—ফলে প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কি না, তা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।