ম্যানচেস্টার সিটিতে মারমুশের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক: হলান্ডের পর নতুন ঝলক

Jony

ম্যানচেস্টার সিটিতে মারমুশের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক: হলান্ডের পর নতুন ঝলক:Dhakainlight.com

২০২২ সালে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে আর্লিং হলান্ডই দলের প্রধান গোলদাতা। প্রথম মৌসুমে লিগে ৩৬টিসহ মোট ৫২ গোল, পরের মৌসুমে ৩৮ আর এবার এরই মধ্যে ২৭। টানা তিন মৌসুম গোলের মধ্যে থাকা হলান্ডের হ্যাটট্রিকসংখ্যাও অবিশ্বাস্য—১১টি। তবে হলান্ডের এত হ্যাটট্রিকের একটিও গতকাল রাতে ওমর মারমুশের মতো দ্রুততম সময়ের নয়।

শনিবার প্রিমিয়ার লিগে নিউক্যাসলের বিপক্ষে ১৩ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের মধ্যে ৩ গোল করেছেন মারমুশ। এ বছরই সিটিতে নাম লেখানো এই ফরোয়ার্ড প্রিমিয়ার লিগে গোলই করেছেন এই প্রথম। স্বাভাবিকভাবেই মারমুশকে নিয়ে কৌতূহল আছে অনেকেরই।

২৬ বছর বয়সী মারমুশ মিসরের খেলোয়াড়। জানুয়ারির চতুর্থ সপ্তাহে শীতকালীন দলবদলে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেন তিনি। ৭ কোটি ইউরোয় ইতিহাদে আসার আগে মারমুশ ছিলেন জার্মান ক্লাব আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টে। সিটির মতো ক্লাবে খেলতে চাইবেন যে কেউই। মারমুশও আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি সইয়ের পর বলেছিলেন, ‘এই দিনটার কথা আমি কখনোই ভুলব না। ম্যানচেস্টার সিটির মতো বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাবে যোগ দেওয়ার অনুভূতি অসাধারণ। আমি অভিভূত। পরিবারও গর্বিত।’

২০১৭ সাল থেকে জার্মান ফুটবলে খেলছেন মারমুশ। শুরুটা উল্ফসবার্গে হলেও প্রথম তিন বছর ছিলেন রিজার্ভ দলে, সুযোগ পেয়েছেন কম। এরপর ধারে সেন্ট পাউলি, স্টুটগার্টে খেলে শেষে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে যোগ দেন ফ্রাঙ্কফুর্টে।

মারমুশকে ম্যানচেস্টার সিটিতে আনাটা দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা থেকে হয়নি। সর্বশেষ চার আসরে লিগ শিরোপা জেতা সিটি এ বছর বাজে সময় কাটাচ্ছে। মৌসুমের মাঝপথে টানা ১৩ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে মাত্র ১টি। চ্যাম্পিয়নস লিগে ভালো করতে না পারায় খেলতে হচ্ছে নকআউট প্লে-অফেও। এই জয়খরার সময়ে সিটি ভুগেছে গোলখরায়।

যখন হলান্ডের ৪ গোলই সর্বোচ্চ, অন্য কেউ ৩ গোলও নয়, তখন গোল করতে—পারে এমন কাউকে খুঁজতে গিয়েই জার্মানিতে মারমুশকে পেয়েছে সিটি।

ক্রীড়া পরিচালক জিকি বেগরিস্টেইন এই মিসরীয় ফরোয়ার্ডের নাম প্রস্তাব করেছিলেন বলে উঠে এসেছে পেপ গার্দিওলার কথায়, ‘মৌসুমটা যেভাবে কাটছিল, সেটা থেকে কাটিয়ে উঠতে জিকিকে বলেছিলাম, যত বেশি খেলোয়াড় আনা যায় ভালো। আমি জার্মানিতে যোগাযোগ করলাম। সেখানে কিছু বন্ধু আছে। তার (মারমুশ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। দেখলাম ভালো ভালো কথা বলছে। আচরণ, অনুশীলন, গোল…।বয়সেও তরুণ, যে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চায়। এ সব মিলিয়েই ক্লাব মারমুশকে আনার সিদ্ধান্ত নেয়।’

সিটির সিদ্ধান্তটি যে সঠিক ছিল, সেটি নিউক্যাসল ম্যাচে বোঝা গেছে। বল পায়ে দ্রুত দৌড়ানো কিংবা ফাঁকা জায়গা খুঁজে নেওয়ার প্রবণতায় সিটির আক্রমণে গতি তৈরি করেছে, যা প্রতিপক্ষের রক্ষণে হুমকি তৈরি করেছে, নিউক্যাসল সেটা সামালও দিতে পারেনি। আর তাতেই এসেছে এক এক করে ৩ গোল। সিটিও জিতেছে ৪-০ ব্যবধানে।

মারমুশের বাড়ি মিসরে হওয়ায় তাঁর সঙ্গে অনেকেই মোহাম্মদ সালাহর নাম টেনে আনছেন। লিভারপুল তারকার সঙ্গে মারমুশের মিলও আছে যথেষ্টই। গতি, ড্রিবলিং দক্ষতা, উইঙ্গার-স্ট্রাইকার দুই ভূমিকাতেই খেলার সামর্থ্য এবং ধীরস্থির থাকতে পারার গুণাবলি প্রায় একই। অবশ্য একটা জায়গায় মিসরের হয়েও কিছুটা আলাদা মারমুশ। মা–বাবার কানাডীয় নাগরিকত্বের সুবাদে তাঁর শৈশবের ছয় বছর সেখানেই কেটেছে। পরে কায়রোতে ফিরে সেখানেই বেড়ে উঠেছেন মারমুশ, ফুটবল শেখার শুরুও ওয়াদি দেগলা যুব একাডেমিতে।

কানাডা, মিসর ও জার্মানি হয়ে মারমুশের ঠিকানা এখন ইংল্যান্ড, যেখানে প্রথম মাসেই পেয়েছেন হ্যাটট্রিকের দেখা। নিউক্যাসলের বিপক্ষে করা মারমুশের এই হ্যাটট্রিক গত এক বছরের মধ্যে সিটির কোনো ফুটবলারের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক, হলান্ডের পর প্রথম। ফ্রাঙ্কফুর্টে মৌসুমের প্রথমার্ধে ২৬ ম্যাচে ২০ গোল করে আসা মারমুশ সামনেও যে আরও গোল পেতে থাকবেন, সে আশা সিটির সমর্থকেরা করতেই পারেন। ক্লাবও তাঁর সঙ্গে চুক্তি সেরে রেখেছে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত।

ম্যানচেস্টার সিটিতে মারমুশের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক: হলান্ডের পর নতুন ঝলক

২০২২ সালে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়া আর্লিং হলান্ড দলের প্রধান গোলদাতা হিসেবে প্রশংসিত। তাঁর অসাধারণ গোলফলাফল—বিশেষত ৩৬ গোলের প্রথম মৌসুম থেকে ৩৮ গোলের পরের মৌসুম—গণনা চলছেই। তবে, গতকাল সিটির মাঠে এক বিস্ময়কর দৃশ্য দেখা গেছে। নিউক্যাসলের বিপক্ষে মাত্র ১৩ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে হ্যাটট্রিক করে দলকে জয় এনে দিয়েছেন মিসরের ফরোয়ার্ড ওমর মারমুশ।

এ বছর সিটিতে যোগ দেওয়া ২৬ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় প্রিমিয়ার লিগে তাঁর প্রথম গোলটি করেছেন এবং এটিও ছিল একটি অবিশ্বাস্য হ্যাটট্রিক। শীতকালীন দলবদলে সিটি তাকে ৭ কোটি ইউরোয় ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে আনলেও, তার আগে তিনি জার্মান ফুটবলে শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

মারমুশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সিটির আক্রমণে নতুন গতি যোগ করেছে, যার ফলে প্রতিপক্ষের রক্ষণব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে তিনটি গোল আসতে সহায়তা করেছে। এমনকি, তাঁর খেলার ধরনেও মোহাম্মদ সালাহর সঙ্গে মিল পাওয়া যায়—গতি, ড্রিবলিং এবং উইঙ্গার-স্ট্রাইকারের দুটি ভূমিকা পালনে দক্ষতা।

অন্যদিকে, সিটি দলের ক্রীড়া পরিচালক জিকি বেগরিস্টেইন যখন মারমুশের বিষয়ে পেপ গার্দিওলাকে অবহিত করেন, তখনই সিটি কর্তৃপক্ষ এই মিসরীয় ফরোয়ার্ডকে দলে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এবং সিটির সমর্থকরা এই সিদ্ধান্তের সুফল পেতে শুরু করেছে, কারণ মারমুশের গতিতে দলের আক্রমণ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।

নিউক্যাসলের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকের পর সিটির সমর্থকরা আশা করতে পারেন যে, মারমুশ সামনে আরও বহু গোলের দেখা পাবেন। ২০২৯ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলা সিটি, তাঁর পারফরম্যান্সের সঙ্গে সমৃদ্ধ হতে চায়।

Top of Form

Bottom of Form

Leave a Comment

Footer Section