চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাহেলা আক্তার (৩৮) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের মোটবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক দিদারুল ইসলামের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাহেলার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরদিন রাতেই সাহেলার ভাই শাহ মো. মোজাম্মেল বাদী হয়ে মিরসরাই থানায় দিদারুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, বিবাহিত জীবনের শুরু থেকেই সাহেলা নিয়মিতভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন। কয়েকবার এসব নির্যাতনের ঘটনা সামাজিকভাবে মীমাংসা করা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
সাহেলার ভাই জানান, ৬ মে সাহেলাকে ঘাড়ে আঘাত করেন দিদারুল। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনি আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু পরদিন ফের ঝগড়ার সময় একই স্থানে আবারও আঘাত পান। এতে তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ অবস্থায় সাহেলাকে হাসপাতালে না নিয়ে বরং উপেক্ষা করা হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাহেলা মারা যান।
সাহেলার ভাই বলেন, ‘আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সে শুধু তিন মেয়ের কথা ভেবে সংসার আঁকড়ে ধরেছিল। কিন্তু দিদারুল আরেকটি বিয়ে করতে চেয়েছিল বলেই তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করত।’
মিরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, প্রাথমিক তদন্তে সাহেলাকে শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। দিদারুল ইসলাম এখনো পলাতক থাকলেও তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এই ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সাহেলার মৃত্যু সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয়রা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।