মিরপুরে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান, দেড় ঘণ্টা দেরিতে শুরু, তিনটি টংদোকান ভাঙার পর তিন দিনের বিরতি

News Desk

মিরপুরে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান, দেড় ঘণ্টা দেরিতে শুরু, তিনটি টংদোকান ভাঙার পর তিন দিনের বিরতি. Dhakainlight.com

রাজধানীর মিরপুরের কালশী স্টিল ব্রিজ–সংলগ্ন বেড়িবাঁধ এলাকায় অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদে পূর্বঘোষিত অভিযান শুরু করেছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। যদিও সকাল ১০টায় অভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল, তা শুরু হয় দেড় ঘণ্টা দেরিতে, বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিএনসিসির অঞ্চল-২–এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান এবং প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফারজানা খানম। তবে ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ছিলেন না।

অভিযানে মাত্র তিনটি টংদোকান ও একটি টিনের ছাউনির ঘরের আংশিক অংশ ভাঙা হয়। অভিযানের সময় দেখা যায়, প্রথমে বন্ধ থাকা একটি ছোট টংদোকান ভেঙে ফেলা হয়। এরপর চা, পান, সিগারেট ও কোমল পানীয় বিক্রির আরেকটি দোকান ভাঙা হয়। দোকানদারকে মালপত্র সরিয়ে নিতে সময় দেওয়া হয়েছিল। পরে বিপরীত পাশে থাকা তৃতীয় একটি দোকানও ভাঙা হয়।

এছাড়া, বাইতুল জান্নাত মাদানী জামে মসজিদ কমিটির নির্মাণাধীন একটি পাকা স্থাপনাও উচ্ছেদের তালিকায় ছিল। স্থাপনাটি মাদ্রাসা কার্যালয়ের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছিল, কিন্তু সেটি রাস্তার জায়গায় হওয়ায় ডিএনসিসি তা অবৈধ ঘোষণা করে। মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে সদস্য আইয়ুব আলী জানান, তারা করপোরেশনের সিদ্ধান্ত মেনে নিজেরাই স্থাপনাটি ভেঙে ফেলবেন। পরে স্থানীয় মুসল্লিদের অংশগ্রহণে কাঠামোটির কিছু অংশ ভেঙেও ফেলা হয়।

অভিযান চলাকালীন সময়ে স্থানীয় দোকান মালিকদের একাংশ উচ্ছেদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগেভাগে জানানো হলে তারা নিজেরাই দোকান সরিয়ে ফেলতেন। হঠাৎ এভাবে ভাঙা তাদের জন্য বড় ধাক্কা। এক দোকানদার বলেন, “এভাবে গরিবের পেটে লাথি মারা ঠিক না।”

একপর্যায়ে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে মাইকিং করে ঘোষণা দেওয়া হয়, অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে থাকা দোকান মালিকদের তিন দিনের সময় দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে মালপত্র সরিয়ে না ফেললে পরবর্তী ধাপে আবারও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

পুলিশ সদস্যদেরও দেখা যায় স্থানীয় জনতার ভিড় সরিয়ে দিতে বাঁশি বাজিয়ে ব্যবস্থা নিতে। যদিও অভিযানে বড় কোনো সংঘর্ষ হয়নি, তবে জনসাধারণের অসন্তোষ ছিল চোখে পড়ার মতো।

অভিযান চলাকালীন সময় কার্যত তিনটি দোকান এবং একটি আংশিক স্থাপনার উচ্ছেদ কার্যকর করা হলেও পুরো এলাকায় মালিকদের মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার সময় দিয়ে অভিযান স্থগিত করা হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিন দিনের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা না সরালে আবারও অভিযান চালানো হবে।

এ ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, রাজধানীতে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে ডিএনসিসির অবস্থান স্পষ্ট হলেও বাস্তবায়নে এখনও কিছুটা ঢিলেমি ও প্রশাসনিক সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে।

Leave a Comment

Footer Section