ময়মনসিংহ নগরে বিএনপি কর্মী ইয়াসিন আলীকে (৩৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, একটি হত্যা মামলা তুলে না নেওয়ায় তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ।
ঘটনাটি ঘটে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে গন্ড্রপা মোড়ে নিজের দোকানে বসে থাকা অবস্থায়। দুর্বৃত্তরা এ সময় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত ও কোপাতে থাকে ইয়াসিনকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আজ শুক্রবার ভোরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইয়াসিন এলাকার একজন সক্রিয় বিএনপি কর্মী ছিলেন, তবে তাঁর দলে কোনো আনুষ্ঠানিক পদ ছিল না। তিনি জেলা দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রোকনুজ্জামান সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
হত্যার পেছনের কারণ নিয়ে ইয়াসিনের স্বজনরা বলছেন, ২০২২ সালের ১ জুলাই লুডু খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত পারভেজ মঞ্জিল হত্যা মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন ওরফে দিলীপ মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য বারবার চাপ দিয়ে আসছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় দোকানে এসে আবারো মামলাটি তুলে নিতে বলেন তিনি। ইয়াসিন এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পরে সশস্ত্র দল নিয়ে হামলা চালান দিলীপ।
হামলার সময় ইয়াসিনের চাচাতো ভাই আমির হোসেনও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন এবং বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে পারভেজ হত্যা মামলার বাদী ও ইয়াসিনের চাচা সাদ্দাম হোসেন জানান, “মামলা করার পর থেকেই হুমকি দিয়ে আসছিল দেলোয়ার ও তাঁর লোকজন। থানায় দুবার জিডি করেছি, আদালতকেও জানিয়েছি। আমার ভাতিজাকে প্রাণ দিতে হলো শুধুমাত্র ন্যায়বিচারের পথ থেকে সরতে না চাওয়ায়।”
ঘটনার পর থেকে প্রধান অভিযুক্ত দেলোয়ার পলাতক রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান বলেন, “ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে কাজ চলছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।”
এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি, জামিনে থাকা আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল, অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।