ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় পাল্টাপাল্টি জাহাজ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত

News Desk

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় পাল্টাপাল্টি জাহাজ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত|Dhakainlight.com

কাশ্মীর ইস্যুতে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ভারত ও পাকিস্তান এবার একে অপরের পতাকাবাহী জাহাজকে নিজ নিজ বন্দরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার একটি স্পষ্ট প্রতিফলন।

শনিবার ভারতের জাহাজ চলাচল বিভাগের মহাপরিচালক এক বিবৃতিতে জানান, পাকিস্তানের পতাকা বহনকারী কোনো জাহাজ আর ভারতের কোনো বন্দরে ঢুকতে পারবে না। একইসঙ্গে ভারতের জাহাজগুলোও পাকিস্তানের বন্দরগুলোতে ভিড়তে পারবে না। ভারতের তরফে বলা হয়েছে, এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জনগণের নিরাপত্তা, জাহাজ চলাচলের স্বার্থ রক্ষা এবং দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে।

এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। দেশটির সমুদ্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বন্দর ও জাহাজ চলাচল বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের পতাকাবাহী জাহাজ আর পাকিস্তানের কোনো বন্দরে ঢুকতে পারবে না এবং পাকিস্তানি জাহাজও ভারতীয় বন্দরে যাবে না। তবে প্রয়োজন হলে ‘কেস-টু-কেস’ ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও জানানো হয়।

কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল ঘটে যাওয়া বন্দুকধারীদের হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। ভারত সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই হামলার অভিযোগ আনে, যদিও ইসলামাবাদ তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এই ঘটনার জেরে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় পাকিস্তান থেকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে আসা সব ধরনের পণ্যের আমদানি ও পরিবহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ জানিয়েছে, ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে নয়াদিল্লি পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।

এছাড়া, ভারত আরও জানিয়েছে, পাকিস্তান থেকে আকাশ ও স্থলপথে পাঠানো ডাক ও পার্সেলও নিষিদ্ধ থাকবে। দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দিয়েছে।

এই পটভূমিতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী স্বল্পপাল্লার আবদালি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার কথা জানিয়েছে। এ ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য এবং সর্বোচ্চ ৪৫০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, এই পরীক্ষার মাধ্যমে সেনাদের যুদ্ধ-প্রস্তুতি এবং কারিগরি সক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে।

এইসব পদক্ষেপ কেবল দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতিই নয়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সংযোগের উপরও বড় ধাক্কা তৈরি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তগুলো দীর্ঘমেয়াদে ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্য ও জনগণের যোগাযোগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এখন দেখার বিষয়, এই উত্তেজনা কোথায় গিয়ে ঠেকে এবং কোনো মধ্যস্থতা বা কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশ কি কোনো সমাধানে পৌঁছাতে সক্ষম হয় কি না।

Leave a Comment

Footer Section