সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে পাকিস্তানের ১১ সেনা সদস্য নিহত এবং ৭৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আইএসপিআর জানায়, ভারতের হামলায় দেশটির অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিকও প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ৭ জন নারী এবং ১৫ জন শিশু। আহত হয়েছেন আরও ১২১ জন বেসামরিক নাগরিক।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ভারত ইসলামাবাদকে ওই হামলার জন্য দায়ী করলে ৬ মে রাতে পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও হামলা চালায়। পরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত শনিবার দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
আইএসপিআরের তথ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৬ জন এবং বিমানবাহিনীর ৫ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহত সেনাসদস্যদের মধ্যে রয়েছেন: নায়েক আবদুল রেহমান, ল্যান্সনায়েক দিলাওয়ার খান, ল্যান্সনায়েক ইকরামুল্লাহ, নায়েক ওয়াকার খালিদ, সিপাহি মুহাম্মদ আদিল আকবর এবং সিপাহি নিসার।
বিমানবাহিনীর নিহত সদস্যরা হলেন: স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ, চিফ টেকনিশিয়ান আওরঙ্গজেব, সিনিয়র টেকনিশিয়ান নাজিব, করপোরাল টেকনিশিয়ান ফারুক ও সিনিয়র টেকনিশিয়ান মুবাশির।
বিবৃতিতে আইএসপিআর জানায়, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী ‘মারকা-ই-হক’ ব্যানারের অধীনে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং ‘অপারেশন বুনইয়ান উন মারসুস’-এর মাধ্যমে নির্ভুল প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। শহীদদের আত্মত্যাগকে ‘সাহস, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের চিরন্তন প্রতীক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
এছাড়া বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বা ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা চ্যালেঞ্জ জানালে তার জবাব দেওয়া হবে ‘দ্রুত, সর্বাত্মক ও চূড়ান্তভাবে’।
আইএসপিআর আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ঘোষণা দিয়েছেন, ‘অপারেশন বুনইয়ান উন মারসুস’-এর সাফল্য স্মরণে প্রতি বছর ১০ মে ‘ইয়াওম-এ-মারকা-ই-হক’ হিসেবে পালন করা হবে।
১৬ মে দিনটিকে দেশের প্রতিরক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা ও আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন হিসেবেও পালিত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।