বিল্ড সম্মেলনে সত্য নাদেলার বক্তব্যে বাধা, চাকরি গেল মাইক্রোসফটের এক প্রকৌশলীর

News Desk

বিল্ড সম্মেলনে সত্য নাদেলার বক্তব্যে বাধা, চাকরি গেল মাইক্রোসফটের এক প্রকৌশলীর. Dhakainlight.com

গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত বিল্ড সম্মেলনে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলার বক্তব্যে হঠাৎ বাধা দেওয়ার ঘটনায় চাকরি হারিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির একজন প্রকৌশলী। ওই প্রকৌশলীর নাম জো লোপেজ। তিনি মাইক্রোসফটের অ্যাজুর হার্ডওয়্যার সিস্টেমস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

ঘটনাটি ঘটে যখন নাদেলা মঞ্চে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় লোপেজ সামনে গিয়ে উচ্চস্বরে বলেন, “সত্য, আপনি কি দেখাতে পারেন কীভাবে মাইক্রোসফট ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে?” তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধে অ্যাজুর কীভাবে সহায়তা করছে, সেটিও প্রকাশ করা হোক। তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের করে দেন। পরে মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষ তাঁকে চাকরিচ্যুত করে।

এই ঘটনার পর বিল্ড সম্মেলনের আরও কয়েকটি অধিবেশনে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদ দেখা গেছে। পাশাপাশি সম্মেলনস্থলের বাইরেও বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। ঘটনার পর লোপেজ সহকর্মীদের একটি ইমেইল পাঠিয়ে তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, মাইক্রোসফটের মতো শক্তিশালী একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের উচিত মানবাধিকার রক্ষা করা। কিন্তু যখন সেই প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের জাতিগত নিধনে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়, তখন চুপ থাকা যায় না।

তিনি উল্লেখ করেন, মাইক্রোসফট স্বীকার করেছে যে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে ‘বাণিজ্যিক চুক্তির বাইরেও বিশেষ প্রবেশাধিকার’ দেওয়া হয়েছে। লোপেজ প্রশ্ন তোলেন, এই বিশেষ সুবিধা একবারের জন্য দেওয়া হয়েছিল, নাকি এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ?

মাইক্রোসফট পরে এক ব্লগ পোস্টে দাবি করে, তাদের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় অ্যাজুর কিংবা এআই প্রযুক্তি গাজায় সহিংসতা চালানোর জন্য ব্যবহৃত হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে লোপেজ এই বিবৃতিকে দায়সারা ও অস্বচ্ছ হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, মাইক্রোসফট নিজেই নিজেকে নির্দোষ ঘোষণা করায় স্বচ্ছতার অভাব দেখা দেয় এবং এতে সংশয় আরও বাড়ে।

প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এর আগেও এমন প্রতিবাদ হয়েছে। গত এপ্রিলে মাইক্রোসফটের ৫০ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী বানিয়া আগরওয়াল এবং ইবতিহাল আবুসসাদও প্রতিবাদ করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, মাইক্রোসফটের এআই ও ক্লাউড প্রযুক্তি ইসরায়েলের নিপীড়নমূলক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করছে। ওই প্রতিবাদের পর তাঁরাও চাকরি হারান।

এই ধারাবাহিক ঘটনার পেছনে বড় একটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকারের প্রশ্নে কী ভূমিকা নিচ্ছে এবং কর্মীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে? বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্ছতা নিয়ে এখন নতুন করে ভাববার সময় এসেছে।

Footer Section